Date : 2024-04-24

প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়েও আজও লড়ে যাচ্ছেন গবেষক মৈনাক গাঁতাইত

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিকঃ বয়স তখন হবে আড়াই থেকে তিনবছরের মধ্যে। সে সময় প্রথম পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে, সে চোখে দেখতে পায়না। তার জীবনের ভিতর ও বাহির দুটোই অন্ধকার। দৃষ্টিহীন হয়ে গোটা জীবনের লড়াই সে কি করে একা লড়বে – এই প্রশ্নই গ্রাস করেছিল তার বাবা-মাকে। সেই প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে আজ বর্তমানে সে ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্স অর্থাত্ বিআইএস-এর ডেপুটি ডিরেক্টর ও গবেষক মৈনাক গাঁতাইত।

গবেষক মৈনাকবাবুর কাছ থেকে জানতে পারি ছোটবেলায় তার চোখের রেটিনার পরিস্থিতি ভালো ছিল না। চিকিত্সকের শরণাপন্ন হয় তার পরিবার। “রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা”-য় আক্রান্ত মৈনাকবাবু। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি হারাবে সে। এমনটাই জানান চিকিত্সক। এই পরিস্থিতিতে শক্ত হাতে ছেলেকে মানুষ করেছেন বাবা মহাদেব গাঁতাইত ও মা কাকলি গাঁতাইত। বাবা মহাদেব গাঁতাইত ভারতীয় বায়ুসেনার অফিসার। মৈনাক গাঁতাইত আর পাঁচটা শিশুর মতো স্বাভাবিক নয় এটা জেনেও ছেলেকে স্বাভাবিক স্কুলে পড়ান বাবা মহাদেব গাঁতাইত। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে শুরু পড়াশোনা মৈনাকবাবুর। শুরু থেকেই ক্লাসের ব্ল্যাকবোর্ড দেখতে পেতেন না তিনি। তাই পড়া শুনে ও রেকর্ডিং করে নিতেন তিনি। পরে ডিজিটাল ম্যাগনিফায়ার ব্যবহার করে পড়াশোনা করেছে।
একাগ্রতা, ইচ্ছাশক্তি ওপর ভরসা করে প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়েছে মৈনাক গাঁতাইত।

মৈনাক গাঁতাইত বয়স বেশি নয়, মাত্র ৩০। চোখে দেখতে পান না। প্রতিবন্ধকতা জয় করে বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্স (বিআইএস)- এর গবেষক এবং ডেপুটি ডিরেক্টর পদে কর্মরত৤ স্টিল তৈরির সময় পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা এবং মরিচহীন স্টিল তৈরির পদ্ধতির ওপর গবেষণা করছেন মৈনাকবাবু।
যারা প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে আজও লড়ে যাচ্ছেন এবং যারা হার মেনে নিয়েছেন জীবন যুদ্ধে তাদের কাছে মৈনাক গাঁতাইত একটি উদাহরণ। কি ভাবে জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হবে। সেই বার্তায় দিলেন মৈনাক গাঁতাইত। তিনি বলেন জীবনে প্রতি মুহুর্তে বাধা আসবে, সংগ্রাম থাকবে। যুদ্ধে হার মেনে নিলে হবে না। সব বাধার মাঝে নিজের হারকে জয়ে পরিবর্তন করাটাই উচিত সকলের।