শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক:- অজয়তীরের হারিয়ে যাওয়া ক্ষয়িষ্ণুগ্রাম গোপালপুর! অদূরে প্রাগৈতিহাসিক যুগের নিদর্শনের পাণ্ডুরাজার ঢিবি। সেই কৃষি ও কৃষকেরা ওই গ্রামের প্রাচীন জঙ্গলঘেরা আখড়াতে গড়ে তুলেছেন ‘প্রকৃতিযাপন’ এর চর্চায় ‘সহজ আশ্রম’। মূলতঃ বিষহীন, সারহীন চাষবাস সঙ্গে গ্রামীণ লোকায়ত সংস্কৃতির পাঠ দেওয়া হচ্ছে এই আখড়ায়। গ্রামকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতেই এই ভালবাসার আশ্রম শুরু করেছেন আউশগ্রামের বাসিন্দা ও লেখক রাধামাধব মণ্ডল। তার সঙ্গে সঙ্গ দিয়েছেন গ্রামবাসী কেশব মণ্ডল, অশোক ঘোষ, পরিধন কর্মকার, প্রদীপ ঘোষ, কালোসোনা মেটে, রতন কর্মকাররা। গ্রাম ও পাশের গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের প্রতিদিনই ‘সহজ পাঠশালা’য় বিনাখরচে পড়াশোনা করানো হয়। এই প্রকৃতিযাপনের আখড়ায় খড়ের বিছানায়, জীবনকে অন্যরকমের স্বাদ দিতে আপনিও এসে কাটাতে পারেন কয়েকটা দিন।
ইতিমধ্যেই আশপাশের লোকশিল্পদের সঙ্গে বাউল, ফকিরদের সঙ্গে কাটাতে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে বহুমানুষ ছুটে আসছেন এই ‘সহজ আশ্রমে’। প্রকৃতিকে নিবিড়তা দিয়ে পেতে চাইলে এই বসন্তেই আপনিও চলে আসুন, গ্রাম বাঁচানোর এই আশ্রমে। এই আশ্রমেই শুরু হয়েছে রাঢ় বাংলার ভাদু উৎসব, গত বছর থেকে। এছাড়াও প্রতি বছর এই আশ্রমেই হয়ে আসছে ‘পাণ্ডুরাজা উৎসব’। এবছর পঞ্চমদোলে প্রকৃতিযাপন উৎসবের আয়োজন করেছে সহজ আশ্রম। এবিষয়ে লেখক রাধামাধব মণ্ডল বলেন, ‘নগরায়ণের দৌলতে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম। সেই গ্রামকে বাঁচিয়ে গ্রামীণ খাবারঘর এবং মাটির বিছানায় প্রকৃতিযাপনে আসুন। শৃগালের চিৎকার আর এই বসন্তে পলাশে শিমুলে ঘুঘু পাখির ডাক আপনাকে অন্যদেশে নিয়ে যাবে। গ্রামীণ লোকশিল্পীদের নানারকমের গান, লোকশিল্প এখানে পাবেন। ‘
সহজ পাঠশালায় পড়াছেন গ্রামের গৃহবধূ রাখী মণ্ডল, মিতালি কর্মকার, পূজা মণ্ডলরা। রাখী মণ্ডল বলেন, ‘গৃহকাজের বাইরে এসে এইসব ছেলেমেয়েদের পড়ানোটা একটা ভাললাগার। এটার টানেই আসা। খুব ভাললাগে।