Date : 2024-04-20

খুনের পরেও ফোনে কথা দীপু- রাব্বানীর

সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- ট্যাংরার ঝুনু রানা নিখোঁজ ও খুনের অভিযোগের ঘটনায় কেটে গেছে প্রায় ১৬ দিন। অভিযুক্তদের বয়ান অনুযায়ী এখনও চলছে যুবকের দেহর খোঁজ। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বৃহস্পতিবার রাত থেকে পঞ্চান্নগ্রাম খালে তল্লাশি অভিযান শুরু করলেও তা এখনও অমিল। খুনের উদ্দেশ্যেই ঝুনু রানার সঙ্গে গুলাম রাব্বানী বন্ধুত্ব করছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

ঝুনুর সঙ্গে অল্প দিনের পরিচয় আর তারপরেই খুন বলে অভিযোগ। ঝুনু ও রাব্বানীর স্ত্রীর বিবাহ- বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই খুন বলে অনুমান করা গেলেও আসল কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ১লা মার্চ বন্ধু দীপু প্রসাদের মাধ্যমে মদের আসরে ঝুনুর সঙ্গে পরিচয় হয় রাব্বানীর।

২রা মার্চ তিনজনের আবার দেখা হয় তবে সেদিন কেউই নেশা করেনি। ঘটনার দিন ৩রা মার্চ সকালে ট্যাংরার চীনা পাড়ার পেমেন্টাল গার্ডেন লেনের আর্সিস অ্যাকাডেমীর কাছে বন্ধু দীপুর বাড়ির কাছে প্রতিদিনের মতো আসে ঝুনু। ঝুনু আসার পরে রাব্বানী আসে সেখানে। ঝুনু ও রাব্বানী সকাল থেকে মদ্যপান শুরু করে। ওই দিন দীপু, রাব্বানী ও ঝুনুর সঙ্গে থাকলেও নেশা করে না। বিকেল নাগাদ ঝুনুকে রাব্বানী, বাড়িতে ছাড়তে যাওয়ার কথা বলে। এরপরই খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আগে থেকেই একটি ভ্যান রিকশা ভাড়া করে রাব্বানীর মামা রিয়াজ। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী পরের দিন ভোরে দেহ একটি নীল রঙের প্লাস্টিকের ড্রামে ঢুকিয়ে ভ্যান রিকশায় চাপিয়ে বাইপাসের ধারে আম্বেদকর ব্রিজের নিচে ফেলে দেয় রাব্বানী।

এরপর পৃথক রাস্তা ধরে রাব্বানী, তাঁর স্ত্রী ও মামা। নিজের ফোন খারাপ তাই যোগাযোগের জন্য স্ত্রীয়ের নম্বর ঘটনার দিন সকালে বন্ধুকে দেয় রাব্বানী। ৪ তারিখ সকালে দীপু ঝুনুর খোঁজে রাব্বানীকে ফোন করলে ঝুনুর খবর জানে না বলেই জানায় রাব্বানী। ৫ তারিখ সকাল থেকে মোবাইল সুইচ অফ করে রাখে রাব্বানী। তবে তাঁর স্ত্রীয়ের ফোন মাঝে মধ্যেই অন করে রাখছিল রাব্বানী। খুনের পরে দীপুর সঙ্গে ২-১ বার কথা হয় দীপুর বলে জানা গেছে। রাব্বানীর খোঁজে তাঁর স্ত্রী, আয়েশা নুরকে ফোন করে দীপু। স্বামীর আপেন্ডিক্সের ব্যথা তাই চিকিৎসকের কাছে গেছেন বলে ফোন কেটে দেওয়া হয়। গ্রেফতার হওয়ার ২ দিন আগেও স্ত্রীয়ের ফোন অন রেখেছিল রাব্বানী। হাতুড়ি দিয়ে খুন করার পর রক্তের দাগ ঢাকতে দেওয়াল রঙ করে গুলাম রাব্বানীর ভাই ইমরান। প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হলেও ঘরের সিলিংয়ে পাওয়া রক্তের ফোঁটার দাগ নজর এড়ায়নি তদন্তকারীদের। তবে খুনের আসল কারণ কী? সম্পর্কের টানাপোড়েনই কি এক মাত্র নাকি রয়েছে অন্য রহস্য? খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র কোথায়? সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দারা।