Date : 2024-04-20

বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস “ধর্ষণ নয়” ১৪বছর পর রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : সম্পর্কে টানাপোড়েন হলেই “অভিযোগ করেন বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস। মহামান্য আদালত নির্দেশ দিতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক উভয়ের সম্মতিতে সহবাস করলে সেটা কখনোই ধর্ষণ বলা যায় না।

মামলার বয়ান অনুযায়ী ২০০৯ সালে ডানকুনি থানা এলাকায় দুই মুসলিম পরিবারের সঙ্গে গভীর আত্মীয়তা বাড়ানো জন্য তারা সিদ্ধান্ত নেন নাম পরিবর্তন ( রাবিয়া সঙ্গে জাহাঙ্গীরের) বিবাহ দেওয়া হবে।

দুই পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু মেলামেশার পর হবু পত্র জাহাঙ্গীর অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে কর্মস্থল গোয়াতে বসবাস শুরু করে। এদিকে যার সাথে বিয়ের সমন্ধ তৈরি হয়েছিল সে স্থানীয় ডানকুনি পুলিশ স্টেশনে হবু বর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে “বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং ধর্ষণের অভিযোগ আনেন।

জাহাঙ্গীরের পরিবারের অভিযোগ পুলিশ তাদের ৪১ধারায় নোটিশ পর্যন্ত দেয়নি। পত্র পক্ষের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩৭৬এবং অন্যান্য ধারায় মামলা রুজু করেন। এবং পাত্রের বাবাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরে তারা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান। পাত্রীর করা এফআরআরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন।

বুধবার বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের এজলাসে মামলা চলাকালীন আবেদনকারীর আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান পাত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক। সেক্ষেত্রে দুজনের সম্মতিতেই শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয় না। তাছাড়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩৭৬ ধারায় মামলা রুজু করা ডানকুনি থানার অতিসক্রিয়ার পরিচয়।

যেখানে দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে এবং মেয়ে নিজেদের সম্মতিতে যদি তারা শারীরিক সম্পর্ক করে সেক্ষেত্রে ছেলের পরিবারের সদস্যদের কোন ভাবেই দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। যদিও নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আদালতে জানান অভিযুক্ত ছেলের পরিবার ধর্ষণে মদত দিয়েছেন। এবং মিথ্যা প্রতিশ্রতি দিয়ে মেয়েটির সাথে প্রতারনা করেছে।

উভয় পক্ষের আইনজীবী বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল নির্দেশ দেন মহিলার পক্ষ থেকে যে অভিযোগ থানায় করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, তার কোন আইনি বৈধতা নেই। এবং ছেলের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করে দেন।

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে এবং মেয়ে নিজেদের সম্মতিতে যদি শারীরিক সম্পর্ক গড়ে সেটা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কলকাতা হাইকোর্টের এই ঐতিহাসিক রায় জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যদের শুধু স্বস্তি নয়, আগামী দিনে এই ধরনের অভিযোগ সম্পর্কিত মামলায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করছেন আইনজীবী মহলের একাংশ।