Date : 2024-03-19

গরমের অজুহাতে স্কুল ছুটি, অনৈতিক বদলি শিক্ষক বদলের বিরুদ্ধে মিছিল।

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক:-

গরমের অজুহাতে দীর্ঘ ৫২দিন স্কুল ছুটি, ছাত্র কম থাকার অজুহাতে হাজার হাজার শিক্ষককে বদলি, কোনো তদন্ত ছাড়াই নিয়োগ দুর্নীতিতে ৩২ হাজার শিক্ষককে বাতিলের মধ্য দিয়ে শিক্ষক সমাজকে কলঙ্কিত করা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসকারী নীতির বিরুদ্ধে শুক্রবার বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ১.৩০ টা নাগাদ কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত হয়ে মিছিল শুরু হয়। মিছিল যায় এসপ্লানেড পর্যন্ত। মিছিল শেষে তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন জমা দেয়।

এবছরের গোড়ায় সরকার ৮২০৭ টি বিদ্যালয় তুলে দেওয়ার তালিকা প্রকাশ করেছিল। তার আগে শিক্ষা ক্ষেত্রে পি পি পি মডেল চালু করবার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। প্রবল জনমতের চাপে তার কোনটাই কার্যকর হয়নি। সরকার হাল ছাড়ে নি।
হাইকোর্টে ১৫দিন শুনানী হলেও সরকার কোনো রকম সহযোগিতা না করে নিরুত্তর থেকেছে। পরিণামে ২০১৭ সালের নিয়োগপ্রাপ্ত ৩২০০০ আনট্রেন্ডদের দুর্নীতির কালিমায় অভিযুক্ত করে বাতিল করেছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিকাঠামো মান্ধাতা আমলের। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫/৬ টি শ্রেণী রয়েছে কিন্তু শ্রেণী ভিত্তিক শিক্ষক নেই। কোন শিক্ষাকর্মী নেই। বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। কেন্দ্রীয় শিক্ষা অধিকার আইন অনুযায়ী ৩০:১ ছাত্র শিক্ষক অনুপাত। শিক্ষকদের দিয়ে ভোটের কাজ, জনগণনা ইত্যাদি শিক্ষাদান বহির্ভূত কাজ করানো চলে। ফলে শিক্ষাদান গৌণ হয়ে গেছে। তাই অভিভাবকরা সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় আস্হা হারিয়ে ফেলেছে। বিদ্যালয়গুলো ছাত্রাভাবে ধুঁকছে। আর সেজন্যই শিক্ষকদের বদলির নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এভাবে ধীরে ধীরে সমস্ত স্কুলেই শিক্ষক উদ্বৃত্ত হবে এবং ভবিষ্যতে সমস্ত স্কুল উঠে যাবে। এ সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে শিক্ষা ধ্বংসকারী।
অনুরূপভাবে গরমের অজুহাতে বারবার ছুটি বৃদ্ধি নিশ্চিতভাবেই শিক্ষা স্বার্থবিরোধী এবং অনৈতিক। দীর্ঘ ছুটির ফলে ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী হবে, স্কুলছুট বাড়বে এবং পরিণতিতে বিদ্যালয়ে ছাত্রের অভাব ঘটবে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা অভিযোগ করে বলেন সরকার বদল হলেও শিক্ষানীতির পরিবর্তন হয়নি। সরকারের ভ্রান্ত শিক্ষানীতির জন্য আজ স্কুলগুলো ছাত্রবিহীনে ধুঁকছে। আর তার সব দায় শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষকদের মান মর্যাদা রক্ষায় সর্বস্তরের শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।