নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক : বিশ্বজুড়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের শুরু করেছে। এই বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে অতি বৃষ্টি অনাবৃষ্টির প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলেই মত পরিবেশবিদদের। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব এতটাই বাড়ছে যে আগামী দিনে কঠিন সময়ের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কাও করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব দেখাতে শুরু করেছি অ্যান্টার্কটিকাতে। সেখানে বরফ গলছে। পাশাপাশি সমুদ্রের জলের উষ্ণতা বাড়ছে হু হু করে। একাধিক নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার স্বত্তেও বাতাসে গ্রিন হাউস গ্যাসের হার চড়ছে। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, দাবানল–সংখ্যা এবং প্রভাব, দুই-ই ঊর্ধ্বগামী। ফলত, আগামি দিনগুলিতে এ বিশ্ব যে ঠিক কতটা গুরুতর বিপদের মুখে পড়তে চলেছে, তার সংকেত মিলতে শুরু হয়েছে এখান থেকেই। যা নিয়ে বার বার সর্তক করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মমল্লাপুরমে আয়োজিত হয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচালার অর্গানাইজেশনের (এফএও) নেতৃত্বে তিন দিনের একটি কনক্লেভ। যেখানে মূলত সমুদ্র এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের ভবিষ্যৎই ছিল চর্চার বিষয়। কিন্তু কনক্লেভ-শেষে যে তথ্য প্রকাশ্যে এল, তা রীতিমতো হাড়হিম করা বিপদের সতকর্বাতা। জানা গেল, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবথেকে বেশি পড়তে চলেছে এশিয়ার দেশগুলির সামুদ্রিক প্রাণীজগতের উপর। যা যথেষ্ট চিন্তার বলে মত বিজ্ঞানীদের একাংশের। ২১০০ সালের মধ্যে এশিয় দেশগুলির অন্তত ৮৬ শতাংশ মৎস্য প্রজাতি পড়বে বিপদের মুখে। বলা ভাল, অস্তিত্ত্ব সংকটে। উত্তর আমেরিকার ক্ষেত্রে এই হার ৭৭ শতাংশ। ওশিয়ানিয়ার ক্ষেত্রে ৭৩ শতাংশ। আর আফ্রিকার সামুদ্রিক প্রাণীকূলের ক্ষেত্রে বিপদের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ।
বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রে বিবিধ প্রজাতির উদ্ভিদ ছাড়াও অগুনতি প্রাণীর বাস। কিন্তু উষ্ণায়নের ফলে যেভাবে ‘মেরিন হিটওয়েভ’ তথা সামুদ্রিক তাপপ্রবাহের মাত্রা বাড়ছে, তাতে আগামিদিনে প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকটে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না । শুধুমাত্র যে সমুদ্রের জলের তাপমাত্রাই বাড়ছে তা নয়, এর ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণও কমছে। ফলে সংকটে পড়ছে প্রবাল এবং নানা ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী।তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার মানে বাষ্পীভবনের হার অনেকটা বেড়ে যাওয়া, যা আবার জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রকারান্তরে এর থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার আশঙ্কা। আবার এর উল্টোটাও কিন্তু রয়েছে। তাই বিজ্ঞানীদের আবেদন
উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল রোধে নেওয়া হোক একাধিক কর্মসূচি। এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখতে অবিলম্বে এগিয়ে আসা উচিত বিশ্বের প্রতিটি দেশের, বলেও মত তাদের।