সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- বড়দিনের রাতে নিজের সার্ভিস রিভলবার থেকে নিজেকে গুলি করেন বছর ৫৩-র কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল তপন পাল। নিউ মার্কেট থানার অন্তর্গত খাদ্য ভবনের ভিতরে কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের ‘ডি’ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন তিনি। ঘটনার তদন্ত করছে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ। বড়দিনের রাতে নাইট ডিউটি ছিল তপন পালের। হাইকোর্টে ডিউটি করতেন তিনি। হরিণঘাটার বাসিন্দা ওই কনস্টেবল এদিন ব্যারাক থেকে বেরিয়ে আরমারিতে সবার আগে রিভলবার নিয়েছিলেন। হাইকোর্টে যাওয়ার সময় গাড়িতে ওঠার ঠিক আগেই ব্যারাকের সামনে নিজের বুকের ঠিক মাঝখানে রিভলবার ঠেকিয়ে গুলি করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বুকে হাত দিয়ে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পাঁজরের হাড় ভেদ করে গুলি হার্টে গিয়ে লাগে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গুলি শরীরের মধ্যে গেঁথে যাওয়ায় রক্তক্ষরণ হয়নি বলে সূত্রের খবর। তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক কারণে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ছিলেন মৃত কনস্টেবল। স্নায়ুর সমস্যাও ছিল তাঁর। সহকর্মীদের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না, তাঁদের সঙ্গে কথা হলে জীবনের প্রতি হতাশা প্রকাশ পেত তাঁর কথায়। ঘটনার দিন ক্যান্টিনের জমা বিল বাবদ ১৭০ টাকা ও এক সহকর্মীর থেকে ধার হিসেবে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছিলেন তিনি, যা সিসিটিভিতে স্পষ্ট।
এর থেকে মনে করা হচ্ছে, তিনি আগে থেকেই আত্মহত্যা করবেন বলে পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। পরিবারের প্রতি উদাসীনতাও প্রকাশ পেত তাঁর কথায় বলে দাবি মৃতের সহকর্মীদের। যদিও এক ছেলেকে হস্টেলে রেখে পড়াচ্ছিলেন তিনি। তবে ঠিক কি কারণে এই ঘটনা ঘটালেন তিনি তা এখনও স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ। এর আগেও দেখা গেছে কলকাতা পুলিশের কর্মীদের মানসিক অবসাদের থেকে আত্মহত্যার ঘটনা। পুলিশের তরফ থেকে নিজেদের কর্মীদের কাউন্সিলিং করানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও ঠেকানো যায়নি আত্মহত্যার মতো ঘটনা। যা আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের অন্দরমহলেও।