ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পুলিসই কোনো সাহায্য করছে না। মেশিন পত্র নিয়ে এলাকায় গেলেও চুপ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে বেলুড় থানার পুলিস। ফলে অসহায় অবস্থায় ফিরে আসতে হচ্ছে পুর কর্মীদের। এমনই অভিযোগে এবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ খোদ বালি পুরসভা। অভিযোগ শুনে রীতিমত ক্ষুব্ধ বিচারপতি বিচারপতি অমৃতা সিনহার প্রশ্ন, ‘পুলিসের কাজ কি স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে থাকা? হাইকোর্টের নির্দেশ কি পুলিস বুঝতে পারছে না?’
ঘটনা হল হাওড়ার বালি পুরসভার অন্তর্গত ঘুসুড়ির ১৪৪ নম্বর গিরিশ ঘোষ রোড এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। অভিযোগ ছিল, পুরসভা থেকে কোনরকম প্ল্যান পাস না করিয়েই তিন তলা একটি নির্মাণ হচ্ছে। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ওই নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। মামলার দীর্ঘ শুনানির পর গত ৮ জানুয়ারি ওই বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা। নির্দেশে উল্লেখ ছিল, ওই বেআইনি নির্মাণ থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পর্যাপ্ত পুলিশ কর্মী পাঠাতে হবে হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে। বেলুড় থানার পুলিশ বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করবে।
কিন্তু এই নির্দেশের পরও ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙ্গা যায়নি।
বুধবার মামলার শুনানিতে পুরসভার তরফের আইনজীবী অভিযোগ করেন পুলিশ কোনরকম সাহায্য করছে না। নির্দেশ মত ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙ্গার জন্য হাওড়া পুরসভা থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিনপত্র নিয়ে পুর কর্মীরা এলাকায় পৌঁছে গেলেও পুলিশ কোন রকম সাহায্য করেনি। পুলিশ কর্মীরা এলাকায় গেলেও তারা ওই নির্মাণের বাইরে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ফলে বাড়িটি না ভেঙেই খালি হাতে ফিরে আসতে হয় পুর কর্মীদের। এই অভিযোগ শোনার পরই বেলুড় থানার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, পুলিশ কি স্ট্যাচু নাকি? তাদের কাজ কি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা? হাওড়া পুলিশের তরফে এজলাস উপস্থিত আইনজীবী বলেন, পুলিশের কাজ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। সেটাই করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এই বক্তব্যে আরও চটে যান বিচারপতি সিনহা। তিনি বলেন, নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছিল ওই বেআইনি নির্মাণে কোন দখলদার থাকলে তা উচ্ছেদ করতে হবে পুলিশকে। তা না করে পুলিস চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল? পুলিশের কি আদালতের নির্দেশ বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে?
এরপরই হাওড়া পুলিশ কমিশনার কে বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দেন, ফের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এবার ওই বেআইনি নির্মাণের চারপাশে হাইকোর্টের নির্দেশ সেটে দিয়ে গোটা নির্মাণ দখল করে থাকা দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে পুলিশকে। এরপর আগামী ১২ মার্চ পুলিশের উপস্থিতিতে ওই নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করবে পুরসভা। ১৯ তারিখ মামলার পরবর্তী শুনানি ঐদিন একটি রিপোর্ট পেশের ও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা।