‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা চলছেই। বৃহস্পতিবার অধীর চৌধুরী বা সীতারাম ইয়েচুরির পর শুক্রবার জোট প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে কটাক্ষ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর মতে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এখন বিনা টিকিটে ট্রেনে (জোটে) ওঠার চেষ্টা করছেন।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- পরপর দুই দিন ইন্ডিয়া জোট নিয়ে নিজের মত জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার চুঁচুড়ার সভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন বিজেপি আর ক্ষমতায় আসছে না। ‘ইন্ডিয়া’ জোট ক্ষমতায় এলে বাংলা চালিকাশক্তি হবে। নিজের (দলের) অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “জোটে নেতৃত্ব দিয়ে বাইরে থেকে সবরকম সাহায্য করবে তৃণমূল কংগ্রেস।” সেই সঙ্গে তিনি অবশ্য এটাও বলেন যে বাংলার সিপিএম, কংগ্রেস কে ধরবেন না। কারণ ওরা বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। আমি দিল্লির কথা বলছি। সেখানে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে নেতৃত্বে দিয়ে, বাইরে থেকে সবরকম সাহায্য করে সরকার গঠন করে দেবো।” তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) এই মন্তব্য সামনে আসার পরই আলোড়ন পরে যায় রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেস ‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে নিজেদের দুরত্ব তৈরি করছে ! যদিও ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন তিনি। বৃহস্পতিবার হলদিয়ার সভা থেকে তিনি জানান, “সর্বভারতীয় স্তরে অনেকে আমায় ভুল বুঝেছেন। আমি বলেছি বাংলায় কোন জোট(ইন্ডিয়া) নেই। কিন্তু ইন্ডিয়া যে জোট, সেটা আমি তৈরি করেছিলাম। সর্বভারতীয় স্তরে আমি ইন্ডিয়া জোট তৈরি করেছিলাম, ইন্ডিয়া জোটে আমরা থাকবো। কোন ভুল বোঝাবুঝির বিষয় নেই।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরপর দুই দিন ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে করা মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধন্দে আছেন, কারণ তিনি ধান্দায় আছেন। উনি(মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) একদিন বলছেন জোটে আছি, আবার একদিন বলছেন জোটে নেই। আসলে তিনি ‘ভাইপো’-কে বাঁচাতে চাইছেন।” এই প্রসঙ্গেই ট্রেনের উদাহরন টেনে সেলিম বলেন, “হাওড়া থেকে সবাই একসঙ্গে (ইন্ডিয়া জোটের সব দল) ট্রেনে উঠলেন,আর উনি ধানবাদে নেমে গেলেন। এখন আর ট্রেনে আছি বলে লাভ কি। উনি এখন আবার ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছেন, কিন্তু বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠা বেআইনি।” কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “উনি(মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যদি ট্রেনের ছাদে ওঠেন তাহলে সেটাও বেআইনি। আর ট্রেনের নিচে যাক, এটা আমি চাইবো না।” রাজ্য সম্পাদকের সুরে সুর মিলিয়ে দমদম কেন্দ্রের বাম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী বলেন, “যতক্ষণ মনে হচ্ছিল নরেন্দ্র মোদী ৪০০, ততক্ষণ উনি জোটে নেই। এখন যখন মনে হচ্ছে সেটা হবে না, তখন উনি আবার বলতে শুরু করেছেন, আমি জোটে আছি। দেশ পল্টুরাম কে দেখেছে এখন পাল্টিবাজ কে দেখছে।” সাত দফা ভোটের চার দফা হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে তিন দফা। ফলাফল বের হওয়ার পর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের চেহারা কি হবে তা সময়ই বলবে, তবে এরাজ্যে জোটের যে দফারফা অবস্থা তা সহজে সালটাবে না বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
আরও পড়ুন : চলতি সপ্তাহে তাপপ্রবাহ, রবিতে বৃষ্টি