কার্গিল বিজয় দিবসের ২৫ বছর। দেশের শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাদাখের দ্রাসে যান ও কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন। কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন পাকিস্তানকে। ১৯৯৯ সালের যুদ্ধের সময় তিনি কার্গিলেই ছিলেন। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রিত্বের তৃতীয় মেয়াদে, ২৫ তম কার্গিল বিজয় দিবসে মোদী সরকারি কার্গিল যুদ্ধের শহিদ ও বীর সেনানীদের অবমাননার অভিযোগ তুললেন পূর্বতন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে।
মোদীর বক্তব্য : আজ থেকে ২৫ বছর আগে ভারত কেবল যুদ্ধে জেতেনি। পাশাপাশি সত্য, প্রতিরোধ ও শক্তির অসাধারণ উদাহরণ রেখেছিল। লাদাখের এই পবিত্র ভূমি আজ কার্গিল বিজয়ের ২৫ বছর উদযাপন করছে। দেশের জন্য যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছেন, আজকের দিনটা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে তাঁরা দেশের ইতিহাসে অমর।
পাকিস্তান তার ইতিহাস থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি। কার্গিল বিজয় দিবসের মঞ্চ থেকে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আরও বলেন, ‘’অতীতে পাকিস্তানের সমস্ত ঘৃণ্য প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও ছায়া-যুদ্ধের মাধ্যমে এখনও নিজেদের প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টা করছে। আমি সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকদের বলতে চাই যে তাদের ঘৃণ্য উদ্দেশে কখনও সফল হবে না। আমাদের সেনারা পূর্ণ শক্তি দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে দমন করবেন এবং শক্রদের যোগ্য জবাব দেবে। ‘’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘’হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করে আমাদের সেনাকে দুর্বল করা হয়েছে। আমাদের বায়ুসেনার চাহিদাকে গুরুত্ব না দিয়ে তেজস যুদ্ধবিমান প্রকল্পকে হিমঘরে পাঠানো হয়েছিল। এরাই এক পদ এক পেনশন নিয়ে মিথ্যাচার করেছিল। অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা প্রসঙ্গেও বিরোধীদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘’
কার্গিলের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের আত্মত্যাগের কথা মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে থাকা দরকার। এমনই মনে করছেন কার্গিল যুদ্ধে নিহত ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার বাবা জি এল বাত্রা। ২৫ তম কার্গিল বিজয় দিবসে হরিয়ানায় তিনি বলেন, ‘’আজকের দিনটা আমাদের কাছে গর্বের। দেশের জন্য আমাদের সাহসী সেনাদের আত্মত্যাগকে অভিবাদন জানাই। ওই সব বীর সেনাদের যুদ্ধজয়ের কাহিনি স্কুলের সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যাতে শিক্ষার্থীরা তা থেকে অনুপ্রেরণা পায়।‘’ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা মাত্র ২৪ বছর বয়সে কার্গিল যুদ্ধে নিহত হন। পরবর্তী সময়ে পরমবীর চক্র সম্মান দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
গত দেড় মাসের মধ্যে একাধিকবার কাশ্মীরে সেনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। তাতে শহিদ হয়েছেন ভারতীয় জওয়ানরা। সূত্রের খবর, সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢুকে ওই জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে। এমনকী পাক সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও খবর। কাশ্মীরে সেনার নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রের উদাসীনতা নিয়ে তোপ দেগেছে বিরোধীরাও। এহেন পরিস্থিতিতেই কার্গিলে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে সরাসরি তোপ দাগলেন মোদী।
আরও পড়ুন : মর্মান্তিক ! পিষে গেলেন রেলকর্মী !