নাজিয়া রহমান,সাংবাদিকঃ বর্ষার মাঝামাঝি। পদ্মার ইলিশ মাছ ধরার মরসুম চলছে। দিবারাত্রি কোনো সময়েই মাছ ধরবার কামাই নাই। ” মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা “পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের শুরুতেই বর্ষাকাল যে ইলিশের মরসুম তা তুলে ধরা হয়েছে। কথায় আছে মাছে ভাতে বাঙালি। আর তা যদি হয় রূপলী শস্য। তাহলে তো কথায় নেই। তবে ইলিশের কথা ভাবলেই, মধ্যবিত্ত বাঙালির মাথায় প্রথম চিন্তা আসে দামের। কিন্তু দাম যতই হোক না কেন বর্ষার মরসুমে ইলিশ ভাজা ও খিচুড়ি একবার অন্তত খেয়ে রসনাতৃপ্ত করেন বাঙালি। যদিও জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহ। এই মরশুমে কিন্তু এখনও বাজারে যোগান বেশ কম ইলিশ মাছের।
বঙ্গজুড়ে বর্ষার মরশুম চললেও এখনও বর্ষার ঘাটতি রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে । উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হলেও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় সেই ভাবে বৃষ্টি না থাকার কারণে বর্ষার ঘাটতি বলে মত আবহাওয়াবিদদের। আর সেই কারণেই বাজারে জোগান কম ইলিশ মাছের। ইলিশেগুঁড়ি আর পুবালি হাওয়ার দোসরে বর্ষাকালে ইলিশের জোয়ার আসার কথা। কিন্তু মৎস্যজীবিদের বক্তব্য, এই বছর আগের বারের তুলনায় ইলিশের জোগান কিছুটা কম । বৃষ্টির ঘাটতি থাকায় সুন্দরবন থেকে পদ্মার ইলিশের জোগান কম থাকার অন্যতম কারণ বলে মত তাদের। এখন বাজারে এক কিলো থেকে দেড় কিলো পর্যন্ত ইলিশ মাছ হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমান বাড়লে বাজারে ইলিশের দাম কমবে বলে আশাবাদী মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এই বর্ষার মরসুমে মফস্সল থেকে মহানগর, সর্বত্র দাপিয়ে ব্যাটিং করে ইলিশ। ইলিশের জোগানের ঠেলায় বাজারে ব্রাত্য হয়ে পড়ে রুই, কাতলা, পমফ্রেট। বাঙালি শুধু ইলিশেই মজে ওঠে। এই ইলিশ নিয়ে বাঙালির পাগলামিরও শেষ থাকে না। আর একথাও সত্য ইলিশের কদর একমাত্র বাঙলি ছাড়া কেই বা করতে পেরেছে। ইলিশপ্রেমীদের বক্তব্য ইলিশের বিকল্প কখনই পমফ্রেট, পার্শে, কাতলা হতে পারে না। তাই বেশ বোঝা যাচ্ছে, টাটকা, নধর, প্রমাণ মাপের ইলিশ যতক্ষণ না বাজারে আসছে, ক্রেতা থেকে বিক্রেতা কেউ-ই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছেন না। কবে বাজার কাঁপাবে জলের রূপলী শস্য তারই দিনগুনছে বাঙালি।
আরও পড়ুন : অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযানে নিকেশ ৩ জঙ্গি