মাম্পি রায়, সাংবাদিকঃ কখনও মাহি কখনও ক্যাপ্টেন কুল। খেলার মাঠ থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া সবসময়েই ট্রেন্ডিং মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৪২ বছর পূর্ণ করে ৪৩-এ পা দিলেন ধোনি (MS Dhoni)। মুম্বইয়ে অনন্ত অম্বানী এবং রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ের অনুষ্ঠানের মাঝেই নিজের জন্মদিন পালন করলেন মাহি। রাত ১২টার সেই সেলিব্রেশনে পাশে ছিলেন স্ত্রী সাক্ষী এবং বলিউডের ভাইজান সলমন খান। স্ত্রীর পর সলমনকে কেক খাইয়ে দেন মাহি। এখানেই শেষ নয়, ধোনির পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন সাক্ষী। আর সেই ভিডিওই মন ছুঁয়েছে নেটিজেনদের। এর আগেও একাধিকবার ধোনি এবং সাক্ষীর কেমিস্ট্রি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কখনও দুজনের খুনসুটি, কখনও ভালোবাসা, কখনও আবার মেয়ে জিভার সঙ্গে দুজনের সময় কাটানোর ছবি। সবসময়েই মন ছুঁয়েছে নেটাগরিকদের। ইতিমধ্যে একসঙ্গে ১৪টা বছর কাটিয়ে দিয়েছেন মাহি এবং সাক্ষী।
মহানগর কলকাতার বুকেই দুজনের সম্পর্কের সূচনা। তাজ হোটেলে ইন্টার্নশিপ করছিলেন সাক্ষী। তখন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ খেলতে ইডেন গার্ডেন্সে ধোনি। দুই পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। শোনা যায় মাহির বাবা এবং সাক্ষীর বাবা রাঁচিতে একই কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কয়েকবছর পর সাক্ষীর পরিবার দেরাদুনে শিফট হয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে সম্পর্কও শেষ হয়ে যায়। ১০ বছর সাক্ষাত ছিল না ধোনি এবং সাক্ষীর। ২০০৮ সালের মার্চ থেকে ডেট করা শুরু করেন মাহি আর সাক্ষী। এক ‘কমন ফ্রেন্ড’-এর মাধ্যমে নতুন করে যোগাযোগ হয়। ২০১০ সালের ৪ জুলাই, দেরাদুনের একটি রিসর্টে সাত পাকে বাঁধা পড়েন দুই লাভবার্ডস। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন সেই সময়ের ভারত অধিনায়ক। ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ধোনি ও সাক্ষীর কোল আলো করে আসে জিভা। ইতিমধ্যে ৯বছরে পা দিয়েছে ছোট্ট জিভা।
‘MS Dhoni The Untold Story’ ছবির মাধ্যমে তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠার লড়াইয়ের গল্প এবং প্রেমকাহিনী নিয়ে জানতে পারেন ধোনিপ্রেমীরা। কিন্তু তাঁর বিয়ে নিয়ে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। কারণ খুবই গোপনে বিয়ে সেরেছিলেন মাহি। একটি সাক্ষাত্কারে সুরেশ রায়না জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালের ৪ জুলাই গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন ধোনি ও সাক্ষী। ধোনির সতীর্থরাও তাঁর বিয়ের ব্যপারে বিন্দু বিসর্গ জানতেন না।
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সুরেশ রায়নার কথায়, ২০১০ সালের জুলাইতে ধোনিকে ফোন করেছিলেন তিনি। তখনই ধোনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘কোথায় আছো?’ রায়না জানান, তিনি লখনউতে রয়েছেন। এরপর ধোনি তাঁকে বলেন, ‘আমার বিয়ে। তুমি দেরাদুনে চলে এসো। লুকিয়ে আসবে। কাউকে জানাবে না। আমি তোমার অপেক্ষা করছি। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই। নর্ম্যাল জামাকাপড় পরেই গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে ধোনির বিয়েতে আমি ওর জামাকাপড় পরেছিলাম।
মহেন্দ্র সিং ধোনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে খুব একটা প্রকাশ্যে আনতে ভালোবাসেন না। তবুও ক্যাপ্টেন কুলের গ্রহণযোগ্যতায় কখনও এতটুকু খামতি হয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট দল হোক বা রনজি ট্রফি। কোনও একটা নির্দিষ্ট জোনের ক্রিকেটাররাই রাজত্ব করতেন মাঠে। কিন্তু রাঁচির মতো ছোট্ট শহর থেকে উঠে এসেও ধোনি যেভাবে ছক্কা হাঁকাতেন, তা ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয় জয় করেছিল। ধোনির ক্যারিশমায় তরুণ প্রজন্ম যে আকৃষ্ট তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন : রথের দিন ব্যস্ততম যাত্রাপাড়া