লর্ডসের মাঠ থেকে আলিমুদ্দিন কিংবা লাল ঝান্ডা হাতে মিছিল এই দুটোই মিলেমিশে এক হয়ে যায় ৮ই জুলাইতে। কারণ এই দিনটা এমন দুই বঙ্গসন্তানের জন্মদিন যাদের জন্য বাংলা সমাদৃত হয়েছে বিশ্বদরবারে বারবার৷ এই ৮ই জুলাই মিলিয়ে দেয় ২২ গজের আর কলকাতার মিছিলের ধুলোকে৷ এই ৮ই জুলাই মিলিয়ে দেয় সৌরভ গাঙ্গুলি (Sourav Ganguly) আর জ্যোতি বসুকে (Jyoti Basu)।
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: বাংলা ভাষা হোক কিংবা বাংলা সংস্কৃতি সবই নাকি এখন বেশ বেমানান। তবু যাদের জন্য আজও বাংলার মুখোজ্জ্বল হয় তাদের মধ্যে সৌরভ-জ্যোতি নি:সন্দেহে অন্যতম।
লর্ডসের মাঠ থেকে আলিমুদ্দিন কিংবা লাল ঝান্ডা হাতে মিছিল এই দুটোই মিলেমিশে এক হয়ে যায় ৮ই জুলাইতে। কারণ এই দিনটা এমন দুই বঙ্গসন্তানের জন্মদিন যাদের জন্য বাংলা সমাদৃত হয়েছে বিশ্বদরবারে বারবার৷ এই ৮ই জুলাই মিলিয়ে দেয় ২২গজের আর কলকাতার মিছিলের ধুলোকে৷ এই ৮ই জুলাই মিলিয়ে দেয় সৌরভ গাঙ্গুলি আর জ্যোতি বসুকে। ৮ই জুলাই দুজনেরই জন্মদিন
কলকাতাবাসীর কাছে আজও বেহালা বলতে প্রথম যা বোঝেন সেটা হল ‘মহারাজ’। ভারতবর্ষ গণতান্ত্রিক দেশ, ইংরেজ শাসনের অবলুপ্তি অনেকদিন ঘটলেও ক্রিকেটের ইতিহাসে মহারাজ আজও আছেন। আসলে তিনি তো শুধু খেলোয়াড় নন, সৌরভ গাঙ্গুলি ভারতীয় ক্রিকেটের পরিভাষা পাল্টে দেওয়ার নাম আজ বিশ্ব ক্রিকেটের আকাশে ভারত যে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র তার পেছনে অন্যতম কান্ডারি তিনিই। প্রতিভা, জেদ, আগ্রাসন, বুদ্ধি, দক্ষতা জেদ তাগিদের মিশ্রণের নাম সৌরভ গাঙ্গুলি।
১৯৯২ সালে ক্রিকেটীয় জীবনের অভিষেক হলেও বাদ পড়তে হয় এক ম্যাচ পরেই। ভেঙে না পড়ে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন কলকাতার রাজপুত্র। ২০ জুন, ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষেক ঘটে আবার। সেই তার নিজেকে প্ৰমাণ করার শেষ সুযোগ। আর তিনি সেই সফরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছিলেন যা আজও স্মরণীয়।
অন্যদিকে রাজনীতির বাইরে ব্যক্তিগত পরিসর বলে জ্যোতি বসুর জীবনে কিছু ছিল না। নিজের ব্যক্তি জীবনকেও তিনি রাজনীতির আঙ্গিকে দেখতে এবং পরিচালিত করতেই সব সময় ভালোবাসতেন। টানা ২৩ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সংসদীয় ব্যবস্থায় এত বছরের সরকার চালানো সারা বিশ্বেই বেনজির। তার আমলে সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন মোড় বদলে দেওয়া কাজ হয়েছে, আবার প্রায় আড়াই দশকের এই কালপর্ব জন্ম দিয়েছে অসংখ্য বিতর্কের। কিন্তু জ্যোতি বসু তো কেবল একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, আলো-অন্ধকার মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গরাজনীতির মহীরুহ।
বিদেশ থেকে ব্যারিস্টারি পড়ে ফিরেছিলেন। চাই চাইলেই সহজেই অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারতেন। তা না করে রাজনীতিতে যোগদান করেন জ্যোতি বসু। বিধানসভার শুরুর দিনগুলিতে মাইনে ছিল ২৫০ টাকা। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেয়েও দলের আপত্তিতে বসা হয়নি কুর্সিতে ৷ সময়টা ১৯৯৬ ৷ দেশে রাজনীতির টালমাটাল পরিস্থিতি ৷ স্বয়ং রাজীব গান্ধীর (Rajib Gandhi) প্রস্তাব ৷ এমন সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া হওয়ায় আফসোস প্রকাশ করেছিলেন শুধুমাত্র দুটো শব্দে ঐতিহাসিক ভুল ৷
তবু আজও খেলার ময়দানে বা রাজনীতির ময়দানে এই দুজনের নাম উচ্চারিত হয় বারবার। অবক্ষয়িত বাঙলা সমাজ আড়ালে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, ভাগ্যিস একটা সৌরভ-জ্যোতি ছিল!
আরও পড়ুন : হঠাৎ করেই মুখ্যমন্ত্রী কে চিঠি দিলেন বিমল গুরুং। কি লিখলেন চিঠিতে