পৌষালী উকিল, প্রতিনিধি : চমত্কারী চা খাইয়ে কুমারী কন্যাদের বশ করতেন ভোলে বাবা। হাথরাসের ভোলেবাবার অজানা রহস্য জানেন কি ? ভোলেবাবার আশ্রমের অন্দরমহলে কি হত জানেন ? কেনই বা এত মেয়ে ভক্ত ভোলেবাবার ? কোন মোহে এতবড় ঘটনার পরও ভোলেবাবার দোষ দেখতেই পাচ্ছেন না তাঁর শিষ্যরা ?
উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের সৎসঙ্গে ১২১ জনের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর পর থেকে প্রতিদিন ভোলে বাবাকে নিয়ে নিত্যনতুন রহস্য উন্মোচন হচ্ছে। পদপিষ্টের ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই উঠে আসছে ভোলেবাবার অচেনা চেহারা।
ভোলেবাবার পছন্দ ছিল শুধু কুমারীকন্যা। কুমারী ও সুন্দরী কন্যাদেরই সবচেয়ে বেশি শিষ্যা করতেন নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সুরজ পাল। যে কুমারী মেয়েরা তাঁকে ঘিরে থাকতেন, তাদের নিয়মিত নিষিদ্ধ মাদকের ইঞ্জেকশান দেওয়া হতো। কুমারী মেয়েদের খাওয়ানো হত বিশেষ প্রসাদ। তাঁরা সুরজ পালকে নিজের স্বামী বলেই জ্ঞান করতেন। সহবাসও করতেন ভোলেবাবার সঙ্গে। এই মেয়েরা তাঁকে এতটাই ভয় পান যে ভোলেবাবার কথায় তারা সবকিছু করতে রাজি।
এমনকি সৎসঙ্গে ভোলেবাবার অন্দরমহলে কোনও পুরুষের প্রবেশাধিকারও নিষিদ্ধ। ভোলেবাবার ডেরার এইসব কালো রহস্য যাতে ভেদ না করা যায়, সেকারণে কয়েকজন শিষ্যাকে ভিডিয়োয় নিষিদ্ধ করে রাখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হত।
ভোলেবাবার পছন্দের রং লাল। তাই সৎসঙ্গের আয়োজক কমিটির দায়িত্ব ছিল সব মেয়েদের লাল শাড়ি-ব্লাউজ বা সালোয়ার-কুর্তা পড়ার। সেই পোশাক পরেই তাঁরা সৎসঙ্গে যেতেন এবং ভজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচ করতেন।
ইতিমধ্যেই ভোলে বাবার ডেরা থেকে উদ্ধার হওয়া ৬ অপহৃত যুবতীকে উদ্ধার করেছেন বিশেষ টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকরা। তাদের লন্ডন, কানাডা ও দুবাইয়ের মত বিদেশে পাচারের পরিকল্পনা ছিল ভোলে বাবার। উদ্ধারকৃত যুবতীদের কারোর বাড়ি উত্তর পূর্ব ভারতের সিকিম তো কারোর বাড়ি অরুনাচল প্রদেশে। কর্মসংস্থানের টোপ দিয়ে তাদের আনা হত এবং আশ্রমের কাল কুঠুরিতে বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলেই অভিযোগ উঠে এসেছে।
জেরার মুখে পড়ে ভোলেবাবার এই জঘন্য কালো রূপ নিয়ে অনেকে মুখ খুললেও অনেকেই তা মানতে নারাজ। লক্ষ লক্ষ মানুষের মসিহা তিনি। পরমাত্মা তিনি। তাইতো তিনি আগে থেকেই জানতেন পদপিষ্টের ঘটনায় এতজনের মৃত্যু হবে। এমনটাও বলছেন ভোলেবাবার সেবিকাদের একাংশ।
প্রশ্ন উঠছে কীভাবে এই সেবিকাদের একাংশ ভোলেবাবার সবটা জেনেও চুপ। আসলে কি সবটাই সম্মতি সাপেক্ষে হয়ে এসেছে, নাকি ভোলেবাবার ভয়ে আজও চুপ তাঁরা।
আরও পড়ুন : Champions Trophy 2025 : প্রশ্নের মুখে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫