প্রথম কিস্তির বরাদ্দ অর্থের মাত্র ৩০ শতাংশ এখনও পর্যন্ত খরচ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া নিয়ে তৈরি হওয়া সংশয়ের মধ্যে টাকা খরচ এর জন্য পনেরো (১৫) দিনের সময়সীমা বেঁধে দিলো রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। সোমবার হাওড়ার শরৎ সদনে হওয়া এক বৈঠকে জেলাগুলোকে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি ছয় থেকে সাত দফা নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বঞ্চনা নিয়ে ২০২১ এর পর থেকেই বার বার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা, আবাসনের বকেয়া টাকা নিয়ে রাজ্যের শাসক দল এই লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে দায়ি করে প্রচার করেছে। এমন অবস্থায় পঞ্চদশ অর্থ কমিশন (15th Finance Commission) থেকে পাওয়া প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকার মাত্র ৩০ শতাংশ খরচ হওয়ার খবরে ক্ষুব্ধ নবান্ন। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, গ্রামোন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের জন্য একেবারে জেলাভিত্তিক টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রথম কিস্তি হিসাবে সেই টাকার পরিমান (রাজ্যের সব জেলা মিলিয়ে) ৩,৩১৫.২৬ কোটি টাকা। ১০ জুলাই পর্যন্ত দফতরের কাছে পৌঁছানো হিসাব অনুযায়ী এই টাকার মধ্যে মাত্র ১,০১৮.২৯ কোটি টাকা। শতাংশের নিরিখে যা মাত্র ৩০.৭২ শতাংশ। এদিকে পরের কিস্তির প্রায় ১,৮০০ কোটি টাকা সম্ভবতঃ এক দুই মাসের মধ্যেই আসার কথা। কিন্তু প্রথম কিস্তির অন্ততঃ ৭৫ শতাংশ টাকা খরচ করা না গেলে পরের কিস্তির টাকা পাওয়া যাবে না। তাই সোমবারের বৈঠক থেকে প্রতিটি জেলাকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগামি ১৫ দিনের মধ্যে সঠিকভাবে টেন্ডার ডেকে বরাদ্দ অর্থ খরচে উদ্যোগী হতে। এ ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রকল্পের কথা না ভেবে স্বল্পমেয়াদি প্রকল্পের খোঁজ করে কাজ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে বৈঠক সূত্রে খবর, রাজ্যের সবকটি জেলায় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দকৃত অর্থ খরচের যে হিসাব পঞ্চায়েত দফতরে জমা পড়েছে তা চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো। একমাত্র কোচবিহার জেলা বরাদ্দকৃত অর্থের (১১৭.৩৩ কোটি) ৫৩.৩৬ শতাংশ অর্থ (৬২.৬১ কোটি) খরচ করতে পেরেছে। বাকি কোনো জেলাই পঞ্চাশ শতাংশের আশেপাশে পৌঁছাতে পারে নি। সবচেয়ে বেশি ৩৪৬.৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিলো দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) জেলার জন্য। ১০ জুলাই পর্যন্ত জমা পড়া রিপোর্ট অনুযায়ী এই জেলা ২৭.৩৭ শতাংশ অর্থাৎ ৯৪.৯০ কোটি টাকা খরচ করেছে। মুর্শিদাবাদ জেলা ৩৩০.৭৫ কোটি টাকার মধ্যে খরচ করেছে ৮০.৩৬ (২৪.২০ শতাংশ) কোটি টাকা। এছাড়া ৩০ শতাংশের নিচে খরচ করা জেলাগুলি হলো বাঁকুড়া (২৮.৯৮ শতাংশ), দক্ষিণ দিনাজপুর (২৮.০৮ শতাংশ), ঝাড়গ্রাম (২৭.৪৪ শতাংশ), হাওড়া (২৬.৯১ শতাংশ), পূর্ব মেদিনীপুর (২৫.৩৮ শতাংশ), পুরুলিয়া (২৫.৩১ শতাংশ), মালদহ (২৫.২৭ শতাংশ), উত্তর ২৪ পরগনা(২৪.৬২ শতাংশ) প্রভৃতি। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে যাতে খরচের হার ৭৫ শতাংশের বেশি করা যায় তারজন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করার জন্য জেলাগুলোকে নির্দেশ দিল পঞ্চায়েত দফতর।
আরও পড়ুন : গণ আন্দোলনের ডাক শুভেন্দুর, ২১ শে জুলাই তৃণমূলের পাল্টা কর্মসূচি বিজেপির