মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কোটাবিরোধী আন্দোলনের (Quota Protest) আঁচ একটু একটু করে নিভতে শুরু করেছিল। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এরইমধ্যে মাথাচারা দিল অসহযোগ আন্দোলন। যার জেরে আবারও কার্যত অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ফেনী, নরসিংদী, পাবনা, কুমিল্লা সহ একাধিক এলাকা। অসহযোগ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ইতিমধ্যে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি (BNP)। অন্যদিকে ছাত্রদের আন্দোলন রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে বলে সরব সরকারপক্ষ। এরইমধ্যে সামনে এসেছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া। তিনি বলেন যারা হিংসা ছড়াচ্ছে ওরা ছাত্র নয় সন্ত্রাসবাসী। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কঠোর হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন আরওয়ামি লিগের প্রধান শেখ হাসিনা (Sekh Hasina)।
এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলনে (Quota Protest) ছাত্রদের বেশ কয়েক দফা দাবি ছিল। এ বার আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, তা হল শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ। এই এক দফা দাবিতে রবিবার ঢাকার রাস্তায় নামেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় তাঁদের। রবিবার থেকে সংঘর্ষের জেরে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে বহু ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে, পাল্টা মারতে ছাড়েনি আন্দোলনকারীরাও। বিশাল মিছিল নিয়ে থানায় ঢুকে দেশি অস্ত্র এবং লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়েছে বিক্ষোভকারীরা। অন্তত ১৪ জন পুলিশকর্মীকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রবিবার সন্ধে ৬টা থেকেই কার্ফু জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। রবিবার পর্যন্ত ফোর জি পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল সরকারের তরফে। ফলে মোবাইল ইন্টারনেট চলছিল না। তবে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু ছিল। সোমবার ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধের নির্দেশ দিল শেখ হাসিনা সরকার। সোমবার থেকে ৩দিনের ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। এরইমধ্যে সোমবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ছাত্র আন্দোলন মঞ্চ। ফলে পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কায় বিভিন্ন মহল।
বাংলাদেশজুড়ে চলা এই হিংসা নিয়ে সরব হয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বিবৃতি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে মর্মান্তিক সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশে উত্তপ্ত পরিস্থিতির আবহে ভারতীয়দের সতর্ক করল বিদেশমন্ত্রক। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিরত থাকার নির্দেশিকা জারি করে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে যে সব ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন, তাঁদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে বাইরে না বেরোন তাও বলা হয়েছে। প্রয়োজনে জরুরি ফোন নম্বরের মাধ্যমে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথাও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।