রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বুদ্ধদেবের শেষযাত্রায় যেন মলিন হল রাজনৈতিক বিভাজন। বুদ্ধদেবকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে মুখোমুখি হলেন অভিষেক-শুভেন্দু। মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এই বিধানসভায় দীর্ঘসময় কেটেছিলেন বামনেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদেরও মিলিয়ে দিল এই বিদায়বেলা। আদিবাসী দিবস উপলক্ষে ঝাড়গ্রামে থাকায় দেখা গেল না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রত্যেকেই সাদা পোশাক পরে এসেছিলেন। যে সাদা পোশাক ছিল তাঁর পরিচয়, সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেহ ঢাকা পড়ে গিয়েছে লাল ফুলে, পতাকায়।
‘’একই সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্রটি মন‘
এক অবাক ছবি দেখল বিধানসভা। রোজ যে বিধানসভা অভ্যস্ত দলাদলি, রাজনৈতিক কলহ দেখে, সেখানে দেখা গেল এক পোশাক, এক রঙ। সেই একই সারিতে দাঁড়িয়ে রইলেন সমস্ত শাসক-বিরোধীরা। বঙ্গ রাজনীতিতে বুদ্ধ-অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি। শেষযাত্রায় গণতন্ত্রের মন্দির বিধানসভায় শাসক-বিরোধী এক সূত্রে বাঁধলেন প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এক ফ্রেমে দেখা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারীকে। ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়, পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধ জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিমেরা।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুদ্ধবাবুকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বুদ্ধদেবাবুর সঙ্গে কথা বলেছিলাম বলে আমাকে বক্তার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিলেন সেই সময়ের বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। বিধানসভায় প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতা পুলিশ কমিশনার। সারা বছরের আক্রমণ, রোষ সব যেন ভুলিয়ে দিল বুদ্ধদেববাবু মৃত্যু। কারণ কথাতেই আছে, জিন্দা থাকলে নিন্দা হবেই, প্রশংসা হবে স্মরণসভায়।