একশো দিনের কাজ হোক বা আবাস যোজনা, ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যকে (পশ্চিমবঙ্গ) এক টাকাও দেয় নি কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর (Abhishek Banerjee) এই দাবি সঠিক। কেন্দ্র সরকার সেটা মেনে নিয়েছে বলে রাজ্যসভার নথি পেশ করে দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’Brien)।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- কিছুদিন আগে লোকসভায় কেন্দ্রিয় বাজেট নিয়ে বিতর্ক আলোচনায় অংশ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) কেন্দ্রিয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে (Nirmala Sitharaman) চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, “২০২১ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election) হেরে যাওয়ার পথ থেকে এখনও পর্যন্ত মনরেগা (MGNREGA) বা আবাস যোজনা (PMGAY)-য় যদি কেন্দ্র ১০ পয়সাও দিয়েছে বলে প্রমাণ করতে পারে তাহলে তিনি (রাজনীতি) ছেড়ে দেবেন।” অভিষেক কেন্দ্র সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে এই বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য সাংসদরাও (লোকসভা বা রাজ্যসভা) বিভিন্ন সময় এই শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রক বা কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয় নি। অচিরে যে প্রকাশ করা হবে, তেমন ইঙ্গিত ও কিছু নেই। এই অবসরে রবিবারের সকালে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’Brien) এর একটি পোষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
রবিবার সোশ্যাল মিডিয়া এক্স হ্যান্ডেলে ডেরেক ও’ব্রায়েন রাজ্যসভার একটি প্রশ্নের লিখিত উত্তরের নথি পোষ্ট করেছেন। সেই নথির উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ডেরেক লেখেন, “অবশেষে মোদি সরকার সংসদে এটা স্বীকার করে নিয়েছে যে মনরেগা (MNREGA) প্রকল্পে বাংলাকে শূণ্য দেওয়া হয়েছে।” প্রমাণ হিসাবে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা একটি ছবিও পোস্ট করেছেন।
২৬ জুলাই’২০২৪ তারিখ, রাজ্যসভায় ৬২২ নম্বর প্রশ্নের যে লিখিত উত্তর দেওয়া হয়েছিলো সেই নথি থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯-২০ অর্থ বর্ষে ১০০ দিনের কাজের টাকায় এ রাজ্যে মোট ৩,৬৫,৬৮৩ টি বাড়ি তৈরি হয়েছিলো। আবার ২০২০/২১ অর্থ বর্ষে এই স্কিমে বাড়ি তৈরির সংখ্যা বেড়ে হয় প্রায় দ্বিগুণ (৬,৭৮,৬৩৩ টি)। কিন্তু তারপরের অর্থ বর্ষ থেকেই এটা কমতে শুরু করে। ২০২১/২২ অর্থ বর্ষে মোট ৪,৭১,১৩৬ টি বাড়ি তৈরি হয় ১০০ দিনের শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে। এর ঠিক পরের বছর (২০২২/২৩ অর্থ বর্ষ) এইভাবে বাড়ি তৈরির সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে কমে হয় মাত্র ১,৬১৮ টি। আর চলতি অর্থ বর্ষে (২০২৩/২৪) এখনও পর্যন্ত এই সংখ্যা শূণ্য। লিখিত উত্তরের এই নথি পেশ করেই ডেরেক ও’ব্রায়েন বোঝাতে চেয়েছেন যে কেন্দ্র সরকার ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে এরাজ্যে পরাজয়ের পর থেকে এই প্রকল্পে টাকা বন্ধ করে দেওয়ার যে অভিযোগ তাঁরা এতদিন ধরে করে আসছেন, কেন্দ্রের দেওয়া এই নথি সেটাকেই সঠিক বলে প্রমাণ করছে।