বিধানসভায় প্রয়াত প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর নিজের প্রাক্তণ দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendhu Adhikari )। বললেন, একবার বিধানসভায় বুদ্ধবাবুর সঙ্গে কথা বলার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে শাস্তি দিয়েছিল।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- বিধানসভায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharya) সঙ্গে কথা বলেছিলেন প্রথমবার বিধায়ক হয়ে আসা এক তৃণমূল বিধায়ক। সেই কথা বলাই কাল হয়েছিলো তাঁর। দলের নির্দেশে দীর্ঘদিন আর বিধানসভায় বক্তার তালিকায় নাম রাখা হয় নি সেই বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। এদিন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীকে বিধানসভায় শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সেই প্রসঙ্গই সামনে আনলেন এই মুহূর্তে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendhu Adhikari)।
বিধানসভার গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী সেদিনের কথা বলতে গিয়ে বলেন, “২০০৭ সালের ১২ মার্চ রাজ্যপালের ভাষণের উপর বক্তৃতা ছিলো। আমার দলের (তখন শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক) পক্ষ থেকে আমাকে কুড়ি মিনিট বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। সেদিন বুদ্ধবাবু আমার পুরো বক্তব্য শুনেছিলেন। আমার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মাননীয় বুদ্ধবাবু আমাকে হাতের ইশারায় ডেকেছিলেন। সেই সময় অধ্যক্ষ প্রয়াত হাশিম আবদুল হালিম বিধানসভার মার্শাল কে দিয়ে আমার কাছে খবর পাঠান যে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। আমি তখন অধিবেশন কক্ষের মধ্যেই তাঁর আসনের কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলি। তার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস আমাকে পানিশমেন্ট দিয়েছিলো। আজকে যিনি জেলবন্দী আছেন তৎকালীন তৃণমূল পরিষদীয় দলের নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর কাছে নির্দেশ এসেছিলো আমাকে যেন আর বলতে না দেওয়া হয়। সেই ২০০৭ এর ১২ মার্চ থেকে ২০০৯ এ আমি সাংসদ হওয়ার আগে পর্যন্ত আমাকে আর তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভায় বক্তার তালিকায় রাখতো না। আমার অপরাধ ছিলো বিরোধী দলনেতা বা তৃণমূল কংগ্রেসের মালিকের নির্দেশ না নিয়ে আমি বুদ্ধবাবুর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমি তখন অতটা বুঝিনি। আমি তখন জুনিয়র এমএলএ, ফার্স্ট টাইম বিধায়ক। ডেকে ফেলেছেন (তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য),আমি তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সেই অপরাধে আমাকে শাস্তি পেতে হয়েছিল।”
প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী কে শেষ শ্রদ্ধা জানানো প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরা সবাই অত্যন্ত ব্যাথিত। এই রাজ্যের রাজনীতির জগতে একজন সৎ, পরিচ্ছন্ন ইমেজের মানুষ ছিলেন। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা ভারতবর্ষ জুড়েই এই মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে ও পরিষদীয় গণতন্ত্রের একজন শরিক হিসাবে তাঁর ভূমিকা রেখে গেছেন। আমি তাঁর সহধর্মিণীর সঙ্গে দেখা করে সহমর্মিতা জানালাম।”