সহেলি দত্ত, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের উত্তরাংশে কৃষিনির্ভর মানুষদের জীবনে এক বছর আগে আশীর্বাদ হিসেবে এসেছিল ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন। এই পাইপলাইন দিয়েই ডিজেল আমদানি শুরু হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরের একটি তেল ডিপো পর্যন্ত বিসতৃত আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইনটির উদ্বোধন করেন। যৌথ এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বছরে ১০ লক্ষ মেট্রিক টন হাই স্পিড ডিজেল বাংলাদেশে পাঠানো হয়। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় সাতটি জেলায় পণ্যটি সরবরাহ হয়ে থাকে। ২০২০ সালে এই পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছিল। এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল ৫২০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ভারত সরকারের খরচ হয়েছিল ৩৩৭ কোটি। সম্প্রতি জানা গেছে, এই প্রকল্প স্থগিত রেখেছে ভারত। বিষয়টি সম্পর্কে যারা অবগত তারা জানান, ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুরের উপজেলার বাইরেও প্রসারিত করার প্রস্তাব ছিল। তবে ভারত সরকার আপাতত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলে এই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করবে বলে জানান হয়েছে ভারতের তরফে। খুচরো চাহিদা ছাড়াও পেট্রোলিয়াম পণ্যের এই সরবরাহ বাংলাদেশের শিল্পগুলির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পকে চালু রাখার জন্য ডিজেলের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। এছাড়া উত্তরাঞ্চলীয় কৃষকদের দ্বারা ব্যবহৃত সকল প্রকার যন্ত্রপাতিকে সচল রাখতে ডিজেল ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্কের জেরেই ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার মনোভাব প্রকাশ করলেও ভারতের এমন সিদ্ধান্ত দেশটির ভিন্ন অবস্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ডিজেলের পাশাপাশি বাংলাদেশে উচ্চ সালফার ফুয়েল অয়েল এবং ফার্নেস অয়েল পাঠানোর প্রস্তাবও বিবেচনা করছে ভারত। সামুদ্রিক শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের কাজে এই তেল ব্যবহার করা হয়।