সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- ভারতীয় রেলে ট্রেন দুর্ঘটনা লেগেই আছে। বুধবার সকালে হায়দরাবাদে বেলাইন হয়েছে একটি পণ্যবাহী ট্রেন। এমনকী বন্দেভারত ট্রেন নিয়েও সমালোচনা চলছেই। খুব তাড়াতাড়ি স্লিপার কোচ নিয়ে আসছে বন্দেভারত। এরই মধ্যে ভারতীয় রেলের তরফ থেকে পাওয়া গেল নতুন খবর। আসতে চলেছে বিশেষ প্রযুক্তির ট্রেন। ডিজেল বা ইলেকট্রিক না, এই ট্রেন চলবে জল দিয়ে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই এই ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু হতে চলেছে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। নানান পরীক্ষা- নিরীক্ষায় সফল হলে এটাই হবে দেশের প্রথম ট্রেন যা জলে চলবে। ট্রেন চালানোর জন্য জলধারণ ইউনিট তৈরি করা হবে আলাদা করে, এমনটাই ভাবনা রেল কর্তৃপক্ষের। এই ট্রেন চালাতে প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৪০ হাজার লিটার জলের প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একটি হাইড্রোজেন ট্রেন তৈরি করতে প্রায় ৮০ কোটি টাকা খরচ পড়বে। এই ধরনের ৩৫টি ট্রেনের ভাবনা রয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষেবার লক্ষ্যে আগামী দিনে রেলের বাজেট বাড়ানো হতে পারে।
অত্যাধুনিক হাইড্রোজেন ফুয়েল প্রযুক্তির মাধ্যমে চলবে এই ট্রেন। তাই হাইড্রোজেন ফুয়েল ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফুয়েল সেলের মাধ্যমে জল থেকে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সাহায্য নিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি হবে। এই বিদ্যুৎ দিয়ে চলবে ট্রেন। বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে বের হবে বাষ্প এবং জল। এই ফলে ডিজেল ইঞ্জিনের থেকেও খরচ কমবে। তার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে হাইড্রোজেন ফুয়েল ট্যাঙ্কের। অন্যান্য ট্রেনের তুলনায় এই ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণও অনেক কম খরচে হয়ে যাবে। গোটা ভারতের বিভিন্ন রুটে এই ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করেছে রেল। দেশের মধ্যে প্রথম হাইড্রোজেন ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে হরিয়ানায়। জিন্দ থেকে সোনিপথ পর্যন্ত (৯০ কিলোমিটার)। এর পাশাপাশি ধাপে ধাপে দার্জিলিং- হিমালয়ান রেলপথ, নীলগিরি রেলওয়ে, কালকা-সিমলা, মাথেরান, কাঙ্গরা ভ্যালি, বিলিমোরা ওয়াঘাই এবং মারওয়ার-দেওঘর রুটে এই ট্রেন চালানোর ভাবনা রেল কর্তৃপক্ষের। জলের সাহায্য চলবে বলে যে এই ট্রেনের গতি কম হবে এমনটা নয়। ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে ১ হাজার কিলোমিটার যেতে পারবে এই হাইড্রোজেন ট্রেন। অন্যান্য ট্রেনের তুলনায় এই ট্রেনের আওয়াজ প্রায় ৬০ শতাংশ কম বলে মত ভারতীয় রেলের।