অনূসুয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের সংবিধানে এবার পরিবর্তনের ডাক। বেশ কিছু অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের আর্জি জানানো হয়েছে আদালতে। কোন কোন অনুচ্ছেদ ? কেনই বা পরির্বতন করতে চাইছে পড়শি দেশ ? কেই বা এই পরিবর্তনের ডাকে সামিল হলেন, কেনই বা হলেন না?
একের পর এক পরিবর্তন ঘটে গেছে বাংলাদেশে। বাদ যায়নি বাংলাদেশের মসনদও। আওয়ামী লীগের জায়গায় এখন অন্তর্বর্তী সরকার। এবার কোপে সে দেশের সংবিধান। ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয় একাধিক রাজনৈতিক মহল থেকে।
কেন এই দাবি ?
বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের
তাই সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি সরানো যেতে পারে
এমনই দাবি করেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান ।
জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। মামলা চলে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশিস রায়চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতে মামলা চলাকালীন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল জানান
আর্টিকেল ২- এ তে বলা হয়েছে, দেশ সমস্ত
ধর্মের উপাসনার জন্য সমান অধিকার রাখে
আর্টিকেল ৯-এ তে উল্লেখ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ
দুই আর্টিকেল একে অপরের পরিপন্থী
এখানেই তাঁর যুক্তির ডালা শেষ হয়নি। আদালতে তিনি বলেন, সাংবিধানিক সংশোধনীতে গণতন্ত্রকে প্রতিফলিত করা উচিত। এবং কর্তৃত্ববাদের প্রচার এড়ানো উচিত।
বাংলাদেশের সংবিধানের দুটি অনুচ্ছেদকে আপত্তি জানিয়েছেন তিনি। কোন কোন সেই অনুচ্ছেদ ?
১. সংবিধানের ৭-এ অনুচ্ছেদ
২. সংবিধানের ৭-বি অনুচ্ছেদ
গণতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করতে পারে, এমন কোনও সংশোধন বা পরিবর্তনকে নিষিদ্ধ করা উচিত। দাবি তোলেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল।
তবে শুধুই যে মহম্মদ আসাদুজ্জামানের তরফে এই দাবি তোলা হয়, এমনটা নয়, সংবিধান সংস্কারের দাবি জানানো হয় নাগরিক ঐক্য মঞ্চ ও বিএনপি সহ একাধিক সংগঠনের তরফে। সংবিধান পরিবর্তনের দাবি করা সকল দলের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানায় বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সংবিধান সংস্কার শীর্ষক সেমিনারে এই আহ্বান জানানো হয়। আলোচকরা সংবিধান সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়াকে কার্যকর করার জন্য নির্বাচনেও আহ্বান জানান। নাগরিক ঐক্য মঞ্চের পাশাপাশি বিএনপির একাধিক নেতারা উপস্থিত থাকেন এই সেমিনারে।
আসাদুজ্জামানের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, ও জাতীয় ঐক্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংবিধান সংস্কারের আহ্বান জানান। আদালতকে পঞ্চদশ সংশোধনীর অসাংবিধানিকতা বিবেচনা করার আহ্বান জানান।