সুজিত চট্টোপাধ্যায়, এডিটর-ইন-চিফ: সার্বজনীক ধর্ম বিশ্বাসের উপর অনুশীলনে ইস্কন। অথচ তাদের ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট বলে দাগিয়ে দিচ্ছেন ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও সামাজিক ঐক্যকে ধ্বংস করবে মাহমুদুরের বক্তব্য। এই কারণে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। এই দাবি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ইসকনের বাংলাদেশের প্রধান মোহন্ত।
বাংলাদেশে কট্টর হাসিনা এবং ভারতরাষ্ট্র বিরোধী মাহমুদুর রহমান বিদেশে আত্মগোপন পর্ব সাঙ্গ করে দেশে ফিরে আসেন। ততক্ষনে ড : ইউনুস বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর কাছে বাংলাদেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার শপথ নিয়ে তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে শপথ নিয়েছেন। মাহমুদুর রহমান দেশে ফিরেই সংবিধান বাতিল থেকে ভারতরাষ্ট্র বিরোধী নিয়ে একের পর এক মন্তব্য দিতে থাকেন। কখনও কখনও এই প্রশ্নে বি.এন.পি. ঘনিষ্ঠ মাহমুদুর রহমান বি.এন.পি.-কে ছেড়ে কথা বলেননি। তার নানা বয়ান, তার সঙ্গে হেফাজত ইসলামী ছাত্র শিবিরের উগ্র বাহিনী দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় তান্ডব চালায়। পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারতো যদিনা ওয়াকার উজ্জামানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিছুটা সক্রিয়তা না দেখাতো। মুখ্য উপদেষ্টা ডঃ মহম্মদ ইউনুস বারবার সতর্কবার্তা দিলেও সেটাকে পাত্তা দেয়নি মৌলবাদী অংশ। তাদের তান্ডবে হিন্দু সংখ্যালঘুদের জীবনজীবিকা প্রশ্নের সামনে এসে দাঁড়ায় এমনকি তাদের তান্ডব থেকে নিস্তার পায়নি আওলিয়াদের মাজার। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ডঃ ইউনুসের নতুন বাংলাদেশ গড়ার সংকল্প নিয়ে।
শেখ হাসিনার সময়তেই ভারত বাংলাদেশের বাণিজ্য থেকে সর্বক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ করছে। সর্বস্তরে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কড়াল গ্রাস নাকি দেখা যাচ্ছে লাগাতার এমনই প্রপোগান্ডা চালিয়ে গেছে নব্য রাজাকাররা। তাদের লাগাতার প্রচারে মন মেজাজে বাংলাদেশের বৃহৎ একটা অংশ যে সহানুভূতিশীল ছিল আওয়ামী লীগের করুন দশা দেখে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়।
উত্তপ্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ইসকন সহ সচেতন জাগ্রত সমাজ রাস্তায় নেমেছে। ৮ দফা দাবি নিয়ে তাদের আন্দোলন গণ বিক্ষোভের চেহারা নিয়েছে। ফলত বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন কীভাবে হবে? কবেই বা দেশের নির্বাচন হবে? অগ্নিমূল্য বাজার কীভাবে স্থিতিশীল হবে? নানাবিধ সঙ্কটের সামনে ডঃ ইউনুসের ভরসাযোগ্য পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছেনা ছাত্রসমন্বয়কের মধ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার বিপ্লবী উচ্ছ্বাস। সব মিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কিই বা করবেন? কী বা দিশা খুঁজবেন ডঃ মহম্মদ ইউনুস? আর তাই অপেক্ষা করছেন আর সুযোগ বুঝে মাহমুদুর রহমানকে তাতিয়ে দিচ্ছেন। মাহমুদুর রহমান প্রশ্ন তুলেছেন – এত সাহস কিভাবে হয় ইসকনের যে তারা চট্টগ্রামে সমাবেঠশ করছেন? মোরাবর্দী জিন্না পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও রক্তাক্ত হতে চলেছে নাকি পাল্টা প্রত্যাখাতে মাহমুদুর রহমানকে পিছু হটতে হবে? এই বছরের মধ্যেই একটা ফয়সালা হবে তা অনেকটাই বলা যায়।