রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশে সম্প্রতি শতাধিক সাংবাদিকের স্বীকৃতিপত্র বাতিল করা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই নিশানায় ছিল সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশে বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি মামলা করা হয়েছে। হাজতবাসও করেছেন কেউ কেউ। যার ফলে বাংলাদেশে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ উঠেছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে। অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানানো হয় আমেরিকার বিদেশ দফতরের ওয়েবসাইটে।
৫ অগাস্ট হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অ্যাসোয়িয়েট প্রেসের ব্যুরো চিফ-সহ ১৮৪ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বালিত করে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই স্বীকৃতিপত্র বাতিল হওয়া নিয়ে নানা জলঘোলাও হয়েছে। কয়েকদিন আগেই সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসকে চিঠি দেওয়া হয়।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ভোটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পরেই সুর বদলান ওভাল অফিস। বুধবার আমেরিকার বিদেশ দফতর স্পষ্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়ে দেয়, কোনও পরিস্থিতিতেই সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও অধিকারে হস্তক্ষেপ করা চলবে না।
জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাট সরকারের আমলে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশের ক্ষমতায় পালাবদলকে স্বাগত জানিয়েছিলেন ওভাল অফিস। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার পর্বেই বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ইউনুস সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন রিপাবলিকান পার্টির নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সিপিজের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত চিঠিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষাকে বাধ্যবাধকতা করার কথা বলা হয়েছে। এই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, যে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের কাজের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়েছে। এই সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারকে সাহায্য করতে হবে। বিশেষ করে জেলে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থক চার সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তের ক্ষেত্রে যেন যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। তাঁরা যেন বিচার পান।
গত ৬ অগাস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে সপরিবারে ভারতে যাওয়ার সময় শ্যামল দত্তকে আটকে দিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। এরপর থেকে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। আর মোজাম্মেল বাবু সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২১ অগাস্ট ফ্রান্সে যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপাকে। এছাড়া এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে হিংসার ঘটনায় ৫২ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, ট্রাম্পের আমলে আমেরিকার সরকার বাংলাদেশ সম্পর্ককে কি অবস্থান নেবে সেটাই এখন দেখার।