সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- মহারাষ্ট্রের তাডোবা টাইগার রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে ওড়িশার সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভে আনা হয়েছিল ৩ বছরের বাঘিনী জিনাতকে। জিনাত একা নয়, সঙ্গে ১টি পুরুষ বাঘকেও আনা হয় ওই টাইগার রিজার্ভে। সিমলিপাল অভয়ারণ্যে বাঘের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই আনা হয় জিনাত ও তার সঙ্গীকে। এই অভয়ারণ্যটি আয়তনে খুব বেশি বড় নয় তাই হয়তো থাকতে সমস্যা হচ্ছিল জিনাতের। ফলস্বরূপ, সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে বেরিয়ে জিনাত হাঁটা দেয় ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার উদ্দেশ্যে। এই বাঘিনীকে দেখা যায়, চাকুলিয়ার একটি গ্রাম থেকে প্রায় ৩০০-৪০০ মিটার দূরে। সেখানে গরু শিকার করে খেয়েছে বলেই দাবি ঝাড়খণ্ড বন দফতরের প্রধান বনসংরক্ষক সত্যজিৎ সিংয়ের। বাঘিনীর অবস্থানের খুব কাছেই গ্রাম হওয়ায় পরিস্থিতি যেকোনও সময়ে জটিল হতে পারে আশঙ্কা বন কর্মীদের। তাই বন কর্মীরা মানবশৃঙ্খল তৈরি করে সংশ্লিষ্ট এলাকাটি সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলেছেন। জিনাতের গলায় পরানো হয়েছে রেডিও কলার।
যার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা তার গতিবিধির উপর নজর রাখা সম্ভব হবে। ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের বন বিভাগের বিশেষ ট্র্যাকিং ও ট্রাঙ্কুলাইজিং দল জিনাতের গতিবিধির উপর নজরদারি করছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বন বিভাগের আধিকারিকরাও ঝাড়গ্রাম জেলার সীমান্তের জঙ্গলে নজর রাখছেন। ঝাড়খণ্ডের বন দফতর জানতে পেরেছে, ঝাড়খণ্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার ভিতরে রয়েছে জিনাত। সীমান্ত দিয়ে কোনওভাবে এরাজ্যে ঢুকে পড়তে পারে জিনাত। যা কার্যত ভাবাচ্ছে বন দফতরের আধিকারিকদের। তাই রাজ্যের বন দফতরের তরফে তৈরি হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তে রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা। ফলে সেখানকার গ্রামের মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হতে পারেন বাঘিনীর অবস্থান জানতে পারলে তাই তাঁদের বাঘিনীর সঠিক অবস্থান জানানো হচ্ছে না। জঙ্গল ছাড়াও জঙ্গলপথেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। সেই সব রাস্তা দিয়ে গ্রামের মানুষ যাওয়া আসা করেন ফলে যেকোনও সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বন বিভাগের। যদিও জিনাতের মধ্যে এখনও তেমন কোনও অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে হঠাৎ করে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে গেলে জিনাতকে ট্রাঙ্কুলাইজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। বর্তমানে ৩ রাজ্যের বন দফতর অপেক্ষা করছে জিনাত স্বাভাবিকভাবে সিমলিপালে ফিরে যায় কিনা।