প্রয়াত হলেন আমেরিকার ৩৯তম প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ১০০ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি। রবিবার জর্জিয়ায় নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জিমি কার্টার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই শয্যাশায়ী ছিলেন জিমি। জর্জিয়ায় নিজের বাড়িতে প্রায় ২২ মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন।
এরইমধ্যে রবিবার প্রয়াত হলেন তিনি। জিমি কার্টারের পুত্র চিপ কার্টার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘ আমার বাবা শুধুমাত্র আমার কাছে নয়, শান্তি, মানবিকতা এবং নিঃস্বার্থ ভালবাসায় যাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁদের সকলের কাছেই আমার বাবা ছিলেন হিরো। তিনি যেভাবে মানুষকে একত্র করেছিলেন, তাঁর জন্যই পৃথিবী আমাদের কাছে পরিবারের মতো। আমরা তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানাতে এই বিশ্বাসগুলো অব্যাহত রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’ তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জিমি কার্টারের সাক্ষরিত একটি ছবি এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে বাইডেন লিখেছেন, ‘৬ দশক ধরে জিমি কার্টারকে বন্ধু বলে ডাকার সৌভাগ্য হয়েছে জিল এবং আমার। জিমির কৃতিত্ব এটাই যে, যারা কখনও তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি আমেরিকার এমন কয়েক লক্ষ মানুষ জিমিকে নিজেদের বন্ধু বলে মনে করেন।’
নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, চ্যালেঞ্জ করে বলছি জিমি কার্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তিনি সমস্ত আমেরিকানদের জীবনকে উন্নত করার জন্য তাঁর ক্ষমতা অনুযায়ী সবকিছু করেছিলেন। তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি একজন মহান দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক। যিনি বিশ্ব শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। শক্তিশালী ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গড়ে তুলতে তাঁর অবদান অনেক। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। ব্রেন ক্যানসারে ভুগছিলেন জিমি কার্টার। ২০১৫ সালে তাঁর এই রোগ ধরা পড়ে। তার পরও আরও ৯ বছর পার করে শতবর্ষ ছুঁয়ে ফেলেন জিমি কার্টার। জিম্মি কার্টারের ৪ সন্তান এবং ১১জন নাতি-নাতনি এবং তাঁদের ১৪জন ছেলেমেয়ে রয়েছে।
একঝলকে দেখে নেওয়া যাক আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনযাপন-
আমেরিকার জর্জিয়া প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন জিমি কার্টার।
কেরিয়ারের শুরুতে বাদাম চাষ করতেন।
পরে জর্জিয়ার গভর্নর পদে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে।
সেখান থেকে হোয়াইট হাউসের দৌড়ে সামিল হন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিমির একাধিক কাজ।
প্রশংসিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলে।
মানবতা এবং সামাজিক অধিকারে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন তিনি।
ইজরায়েল এবং মিশরের মধ্যে শান্তিস্থাপন করেছিল।
১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
তবে খনিজ তেলের সমস্যা-সহ একাধিক বিষ।
সমালোচনার মুখে পড়েছিল তাঁর সরকার।
২০০২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল তাঁকে।