সন্দেশখালির ঘটনার সময় সেখানকার মা বোনদের সম্মান নিয়ে টানাটানি করেছে শেখ শাহজাহান এর দলবল। জমি জবরদখল বাদ দিয়ে এটাই ছিলো ওখানকার মহিলাদের একটা বড় অংশের মারাত্মক অভিযোগ। সোমবার সেই সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানকার মা বোনদের সতর্ক করে বললেন, “কেউ ডাকলেই চলে যাবেন না।”
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ২০২৪ এর প্রথম মাসে (জানুয়ারি) যে অশান্তির আগুন জ্বলেছিল সন্দেশখালিতে, বছরের শেষ মাসে এসে সন্দেশখালির মা বোনদের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার কাজ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ২০২৬ এর ভোটের বিউগল ও বাজিয়ে দিয়ে গেলেন। যে অভিযোগকে সামনে রেখে অশান্ত হয়ে ওঠে এখানকার বয়ারমারি, ঝুপখালি, দাড়ার জাঙ্গাল, সরবেরিয়া প্রভৃতি এলাকা তারমধ্যে জমি দখল করে ভেরি তৈরির অভিযোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সেই অভিযোগ বিষ্ফোরকের মাত্রা নেয় যখন এখানকার বেশ কিছু মহিলা অভিযোগ করেন যে তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সদস্য শেখ শাহজাহান এর লোকজন তাদের শ্লীলতাহানি করেছে। একজন বা দুইজন নয়, এমন অভিযোগ তুলতে থাকেন একাধিক মহিলা। শেখ শাহজাহান এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন এখানকার মানুষজন। শুরু হয় পথ অবরোধ, তৃণমূলের নেতাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা, মারধর করা। গ্রামে পুলিশ ঢুকতে গেলে পুলিশকে বাধা দেওয়া হয়, তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। দিনের পর দিন তা চলতে থাকে। গ্রামবাসীদের পাশে এসে দাঁড়াতে দেখা যায় তৃণমূল বিরোধী সবকটি রাজনৈতিক দলকে। অনেক মহিলাই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন তাদের রাত বিরেতে ডেকে পাঠানো হতো ভেরির আলা ঘরে। পিঠে তৈরি করে দেওয়ার নাম করে তাদের রীতিমতো শ্লীলতাহানি করা হতো দিনের পর দিন। এমন মারাত্মক অভিযোগের ফলে শাসকদল ও প্রশাসনকে ঘিরে ধরে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস সহ সবকটি রাজনৈতিক দল। মহিলারাই পুরো আন্দোলনটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
সন্দেশখালির ঘটনার পর এই প্রথম এপিসেন্টারে এসে মুখ্যমন্ত্রী সেই মহিলাদেরকেই কাছে টানার বার্তা দিলেন।এদিন সেই সব কিছুর জবাব দেওয়ার জন্য সরকারি মঞ্চটাকে বেঁছে নেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যথেষ্ট ভিড় হয়েছিলো। যার মধ্যে মহিলাদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। সেই ভিড়কে লক্ষ্য করেই সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোনো দুষ্টু লোকের খপ্পরে পড়বেন না। এখানে অনেক টাকার খেলা হয়েছে। বিজেপির টাকায় হাত দেবেন না।” মহিলাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, “কেউ ডাকলেই চলে যাবেন না।” পাশাপাশি বাড়িতে পিঠে পুলি হচ্ছে কি না, তার খোঁজও করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী কে, যা আসলে সেই সময় ওটা অন্যতম বিষ্ফোরক অভিযোগ। সব অভিযোগকে সরাসরি খারিজ না করেই মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালি লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “দেখলেন তো সব ভাঁওতা।” এদিকে বিজেপির দাবি মুখ্যমন্ত্রীর সভা সফল করার জন্য বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসেছে প্রশাসন।