আবারও কি ফিরতে চলেছে সেই লকডাউন? সেই করোনার মৃত্যু মিছিল দেখা যাবে আবারও? এই মুহুর্তে নয়া ভাইরাস HMPV নিয়ে ছড়াচ্ছে মারাত্মক আতঙ্ক।
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: ঠিক ৪ বছরের ব্যবধান আর তার মধ্যেই সেই চেনা ভয়! ২০২৫ সালের শুরুতেই ফের সেই চিনেই হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস তথা এইচএমপিভির দাপট দেখা দিল। যার জেরে ফিরছে করোনার আতঙ্ক।
এই নয়া ভাইরাসেরও কোভিডের মতোই উপসর্গ। সার্স-কভ ২ বা করোনাভাইরাসের মতোই প্রজাতি। একই রকম রোগ ছড়ায়, তবুও খানিকটা আলাদা। চিনে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে একগুচ্ছ ভাইরাস, যার মধ্যে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা hmpv নিয়েই চর্চা বেশি হচ্ছে। আর চিন্তাও বাড়ছে সাধারণ মানুষের কারণ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে নয়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিনের হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়া রোগীদের ভিড়ের ছবি। যা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন তাহলে কি আবারও করোনার সেই ভয়াবহতা ফিরতে চলেছে! যদিও এখনও অবধি ভারতে কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর নেই।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এই ভাইরাস বয়স্ক এবং শিশুদের মধ্যে ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি এই মুহুর্তে ভারতে শ্বাসযন্ত্রের সক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের ডেটা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে, ডিসেম্বর মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে শ্বাসযন্ত্রের সক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যার বিশেষ বৃদ্ধি হয়নি। পাশাপাশি ভারতীয়দের সংক্রমণ এড়াতে স্বাভাবিক কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার কথাও বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে৷
এই ভাইরাসটি ২০০১ সালে প্রথম ছড়িয়ে পড়ে নেদারল্যান্ডসে। এখনও অবধি এই ভাইরাস সাধারণত সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, গবেষকরা অনুমান করেছেন যে শিশুদের মধ্যে প্রায় ১০% থেকে ১০% শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণ এইচএমপিভি ভাইরাস। ৫% থেকে ১৬% শিশুর নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
যদিও ভারত এই নয়া ভাইরাসের থাবা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে শীতকালে সাধারণত শ্বাসনালীর সংক্রমণকারী ভাইরাসের দাপট কিছুটা বৃদ্ধি পায়। আর সেটা সামলাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতাল যথেষ্ট প্রস্তুত থাকে। পর্যাপ্ত শয্যা এবং জোগানের বন্দোবস্ত আছে। অন্যদিকে বেজিংও জানাচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “শীতকালে শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ বাড়েই। সকলকে আশ্বাস দিয়ে বলা হচ্ছে, চিনের প্রশাসন নাগরিক ও পর্যটকদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন। চিনে ভ্রমণ করা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।” সোশ্যাল মিডিয়াতেও চিনে বসবাসকারী অনেকেই বলছেন যে ভয় পাওয়ার মত অবস্থা তৈরি হয়নি।
সব মিলিয়ে কিছুটা চিন্তা থাকলেও করোনা পরিস্থিতি যেন কিছুতেই ফিরে না আসে সেটাই বলছেন সকলে।