মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জো বাইডেনের মেয়াদ শেষ হতেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয়বারের জন্য হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করেছেন তিনি। এরইমধ্যে অন্যতম হল যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আর্থিক অনুদান দেওয়া স্থগিত রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে কয়েক লক্ষ মানুষের এইডসে আক্রান্ত হয়ে যেতে মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রসংঘের।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতিতে আর্থিক অনুদান দেয় আমেরিকা। ইন্টারন্যাশনাল স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট সংস্থার মাধ্যমে এই অনুদান দেয় তারা। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলির মধ্যে আমেরিকার অনুদান সর্বোচ্চ থাকত। কিন্তু এবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই অনুদান তিন মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করলেন। ট্রাম্প সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের রোগ নিরাময় সংক্রান্ত অভিযানের প্রধানের আশঙ্কা, আমেরিকার এই অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্তে বিশ্বে কয়েক লক্ষ মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। UNAIDS সংস্থার প্রধান উইনি ব্যানিইমা জানান, অনুদান না-থাকলে, বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
বিশ্বে এইডস নিরাময়ে কাজ করা সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, ওই মার্কিন অনুদানে প্রায় ২ কোটি এইডস রোগী উপকৃত হতেন। প্রায় ২ লক্ষ মানুষ সুবিধালাভ করতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান বন্ধ হয়ে গেলে আগামী পাঁচ বছরে ৬০ লক্ষের বেশি মানুষের এইডসে মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, কয়েকটি জীবনদায়ী ওষুধের ক্ষেত্রে অনুদান এখনই বন্ধ করছে না আমেরিকা। তবে এদিকে আবার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন আফ্রিকার স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরতেই বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক কাঠামোর উন্নয়নে আমেরিকা যে অর্থ বরাদ্দ প্রদান দিত, তাতে কাটছাঁট করা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলিতে ৪৮ কোটি ৬০ লক্ষ ডলারের বেশি খরচ করত আমেরিকা। জো বাইডেনের আমলে এই প্রকল্পে ভারতের জন্য ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার বরাদ্দ করা হয়। এবার সেই অনুদান বন্ধ হয়ে গেলে, একদিকে যেমন অন্যান্য দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনই ক্ষতির শিকার হবে ভারতও। কয়েকদিন আগে ট্রাম্প ও মোদীর বন্ধুত্বের যে ছবি গোটা বিশ্ব দেখেছিল, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অনুদান বন্ধ করে বন্ধু ভারতকে কি সমস্যায় ফেলবে ট্রাম্প সরকার ? সেদিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।