ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়,সাংবাদিক:দু’বছর আগে একটি খুন ও মিথ্য মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে উঠে এল আর জি কর খ্যাত সন্দীপ ঘোষের প্রসঙ্গ। সংযুক্ত দু’টি মামলায় একই তদন্তকারী সংস্থাকে কেন তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হবে না? রাজ্যের কাছে সেই প্রশ্নের জবাব তলব করেছে হাইকোর্ট। কারণ আর জি করের খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই যুক্তিতে আর জি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলাতেও সিবিআইয়ের কাছে তদন্তভার যায়। এক্ষেত্রে কেন তেমনটা হবে না? রাজ্যের কাছে সেই প্রশ্নেরই উত্তর চেয়েছে আদালত।
ভাসুরকে না পেয়ে স্বামীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিস। পরদিন সকালে একটি বাঁশ বাগান থেকে ওই স্বামী শওকত মণ্ডলের দেহ উদ্ধার হয়। যার জেরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্ত্রী মঞ্জুরা বিবি। নদীয়ার করিমপুরের মরুটিয়া থানার এই ঘটনায় আগেই এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি সিসিটিভি সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত যেদিন অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ওই নির্দেশ দিচ্ছেন সেদিনই মামলাকারীর ভাসুরের স্ত্রীকে থানায় তুলে নিয়ে যায় পুলিস। এবং পরবর্তীতে অন্য একটি খুনের ঘটনায় ওই মহিলাকে অভিযুক্ত করে দেয় পুলিস। বাধ্য হয়ে ওই মহিলা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানালে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ ওই মহিলার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার পাশাপাশি মিথ্যা মামলার অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
এখন একই ঘটনার সূত্রে আগেই আদালত যেহেতু সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, তাই পুলিসি হেফাজতে স্বামী শওকত মণ্ডলের মৃত্যুর মামলাতেও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মঞ্জুরা। বুধবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী নীলাদ্রী শেখর ঘোষ ও আইনজীবী দেবর্ষি ব্রহ্ম দাবি করেন, পুলিসি হেফাজতে এই মৃত্যুর ঘটনাতেও সিবিআই তদেন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। যার বিরোধিতা করে রাজ্য জানায়, এটি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাই নয়। তখনই বিচারপতির মুখে উঠে আসে সন্দীপ ঘোষের প্রসঙ্গ। বিচারপতি বলেন, আর জি করের খুন ও ধর্ষণ কাণ্ড সিবিআই পাওয়ায় তাদের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে তাহলে কেন তেমনটা হবে না। চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।