মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগ, তারপর মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন। এই সময়কালের মধ্যে একাধিকবার অশান্তির আঁচ ছড়িয়েছে বাংলাদেশে। এবার অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হতেই আবারও উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। অস্থির পরিস্থিতির জেরে অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে ঘরে-বাইরে। দেশের আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়ার সময় নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন মহম্মদ ইউনুস। শনিবার অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হওয়ার দুদিন পর যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় ১৩০০-র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধুমাত্র গাজীপুরেই ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। ধৃতেরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক। ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ভাঙচুরের পর গোটা বাংলাদেশ জুড়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার বাড়িতে হামলা, আগুন লাগানোর পাশাপাশি ভাঙচুর চালানো হয়। ঢাকার কাছে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হকের বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাতেও অনেক ছাত্রনেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷ এরপরেও ইউনুস সরকারের দাবি নাকি, হাসিনার ভার্চুয়াল বার্তা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়িতে ভাঙচুরের পর গাজীপুরে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সেই পরিস্থিতির কারণেই শনিবার রাতে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। অথচ গ্রেফতার তেরোশোর বেশি মানুষ সকলেই আওয়ামী লীগের সমর্থক। তবে কি আদৌ শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছেন ইউনুস ? বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা অবসপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মতে, এটি আসলে দেশের নিরাপত্তার জন্যই করা হচ্ছে। তিনি বলেন শয়তান বলতে বোঝায় দুষ্ট শক্তি, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করছে, আইনভঙ্গ করছে, অপরাধমূলক কাজে জড়িত, তাদেরকেই টার্গেট করা হবে অপারেশন ডেভিল হান্টে।
২০২৪-এর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ২০২৫-এর ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৬টি ঘটনা ঘটেছে যেখানে হিন্দুদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ এখন পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ৮৮টি মামলায় ৭০ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১২৫৮টি এমন ঘটনা নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এরপরও ইউনুস বলবেন তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ? ইউনুস বলতে পারবেন যে, সংখ্যালঘুদের বেছে বেছে আক্রমণ করা হচ্ছে না ? এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠছে। এইসব প্রশ্নের কি আদৌ কোনও সদুত্তর রয়েছে ইউনুস সরকারের কাছে ? মনে হয় না।
এদিকে একের পর এক বিপর্যয় কাটিয়ে যখন আওয়ামী লিগ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই হাসিনার দলকে কুঠারাঘাত করছে ইউনুস সরকার। সব বাধা কাটিয়ে কি তবে আবারও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে আওয়ামী লিগ, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।