ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়,সাংবাদিক: কলকাতা শহর বা তার আশপাশে জলাভূমি বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণের ভুরি ভুরি অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাইকোর্টে এমন অজস্র মামলা ঝুলে রয়েছে, যেখানে মূল অভিযোগ, জলাভূমি বোজানোর। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বুজিয়ে ফেলা জলাভূমি আগের অবস্থায় ফেরানোর বোঝানোর রায় দেওয়া হলেও, বাস্তবে বহু ক্ষেত্রে তা আগের অবস্থায় ফেরানোর নির্দেশ কার্যকর হয় না বলে অভিযোগ। এবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরে অনুমতি ছাড়া বুজিয়ে ফেলা জলাভূমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। একইসঙ্গে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই বুজিয়ে ফেলা জলাভূমি ফের পুকুরে পরিণত করতে, পুরসভা সহ সব বিভাগ কাজ করলে, সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে। ফলে গড় বহরমপুর মৌজায় বেআইনিভাবে প্রায় দেড় বিঘা জমির উপর থাকা পুকুর, এবার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে দায়িত্ব নিতে হবে পুরোসভাকে।
এর আগে এই মামলায় বিচারপতির সিনহা নির্দেশ দিয়েছিলেন, সব পক্ষকে ওই জায়গা খতিয়ে দেখে এসে বাস্তবে বেআইনিভাবে জলা বোঝানো হয়েছে কিনা তার রিপোর্ট দিতে। সোমবার বহরমপুর পৌরসভার তরফে আইনজীবী অরিন্দম দাস জয়েন্ট ইন্সপেকশন রিপোর্ট তুলে দেন আদালতের হাতে। তাদের বক্তব্য, পুরসভা, ব্লক ভূমি সংস্কার দপ্তর, বাদি ও বিবাদী দুপক্ষ — সবাই মিলে ওই জায়গা সরজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা হয়। তাতে প্রায় দের বিঘা জমির উপর থাকা পুকুর কোনও অনুমতি ছাড়াই মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলা হয়েছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তারপরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, ওই মাটি তুলে ফেলে পুকুরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে পুরসভাকে হাইকোর্টের অনুমতি, এই কাজ করতে যে টাকা খরচা হবে, তা তারা আদায় করতে পারবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের থেকেই। ফলে কলকাতা শহরে নির্দেশ কার্যকর হওয়া নিয়ে সংশয়, প্রশ্ন থাকলেও, বহরমপুরের মত মফস্বল শহরে এই নির্দেশ কার্যকর হলে, তা নজির সৃষ্টি করবে বলেই মনে করছেন পুরকর্তারা।