মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সুপ্রিম কোর্টে আপাত স্বস্তি পেলেন রণবীর এলাহাবাদিয়া। বাবা-মায়ের যৌন সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ইউটিউবার রণবীর। তা নিয়েই তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে। একের পর এক এফাইআর দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে । ক্ষমা চেয়েও সুরাহা হয়নি। অবশেষে কোনও পথ না পেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রণবীর। মঙ্গলবার রণবীর এলাহাবাদিয়াকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে এই বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও পুলিশি অভিযোগ দায়ের করা যাবে না। তবে রণবীরের অশ্লীল মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্তের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের আচরণের নিন্দা হওয়া উচিত। আদালতের প্রশ্ন’শুধুমাত্র জনপ্রিয় বলেই সমাজকে হালকাভাবে নিতে পারেন না। পৃথিবীতে কি এমন কেউ আছেন, যিনি এই ভাষা পছন্দ করবেন? তার মনে খুব নোংরা কিছু আছে যা তিনি বমি করেছেন। আমরা কেন তাকে রক্ষা করব? এই মন্তব্য বিকৃত মনেরই প্রতিফলন। আপাতত রণবীর এলাহাবাদিয়া কোনও ইউটিউব চ্যানেলে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে পারবেন না। এমনই নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মা-বাবার যৌনতা নিয়ে ইউটিউবার রণবীরের অশ্লীল মন্তব্যের জেরে হু হু করে নেমেছে তাঁর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা। ক্ষুব্ধ তাঁর অসংখ্য ফলোয়ার। ভারতীয় সংস্কৃতি, পারিবারিক পরম্পরা ও ঐতিহ্যকে অসম্মানের অভিযোগে ইউটিউবারের বিরুদ্ধে অসম, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যের একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রণবীরের মায়ের ক্লিনিকে ঢুকে হামলা চালাল লোকজন। শুধু তাই নয়, অভিযোগ একের পর এক খুনের হুমকিও পাচ্ছেন তিনি।
ইন্ডিয়াস গট ল্যাটেন্ট শোতে বিতর্কিত মন্তব্যে ছিছিকার শুরু হতেই রণবীর এলাহাবাদিয়ার আর কোনও খোঁজ মেলেনি। সোশাল মিডিয়া তো দূরঅস্ত, বাড়ি গিয়েও পুলিশ তাঁকে খুঁজে পায়নি। বন্ধ দরজা। বন্ধ মোবাইল ফোন। তবে শনিবার সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে রণবীর অভিযোগ করেছিলেন যে, একের পর এক খুনের হুমকি পাচ্ছি। আমার পাশাপাশি আমার পরিবারকেও খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রোগীর ছদ্মবেশে আমার মায়ের ক্লিনিকে ঢুকে হামলা করেছে কিছু লোক। ভীষণ ভয়ে রয়েছি এবং কী করব বুঝতে পারছি না।” এরপরই ক্ষমা চেয়ে রণবীর এলাহাবাদিয়া বলেন, “ইন্ডিয়াজ গট ল্যাটেন্ট শোয়ে ওই মন্তব্য করা আমার সত্যিই ভুল হয়েছে। বাবা-মা সম্পর্কে আমার মন্তব্য অত্যন্ত অসংবেদনশীল এবং অসম্মানজনক ছিল, আমি মানছি। নৈতিক দায়িত্বের কথা আমার মাথায় রাখা উচিত ছিল। ওই মন্তব্যের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি এবং আমার টিম পুলিশ এবং সমস্ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাঁদের সহযোগিতা করছি। কথা দিচ্ছি, আইনি প্রক্রিয়ায় যা যা করা দরকার, আমি তাই করব। কর্তৃপক্ষ আমাকে যখন ডাকবে, তখনই পাবে।”
সবমিলিয়ে তিল তিল করে তৈরি করে পরিচিতি একটি বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। এরপর কি আগের মতো আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন রণবীর এলাহাবাদিয়া ? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।