ফের একবার বিধানসভা অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হলো বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। ২০২২ সাল থেকে এই নিয়ে মোট আট বার, যা এককথায় নজিরবিহীন।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- অধ্যক্ষকে অপমান ও অধ্যক্ষের চেয়ারের দিকে কাগজ ছুঁড়ে মারার ঘটনায় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ আরও তিন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি তিন বিজেপি বিধায়ক হলেন অগ্নিমিত্রা পাল, বঙ্কিম ঘোষ ও বিশ্বনাথ কারক। বিধানসভার রুল ৩৪৮ এর সাব সেকশন ২ অনুয়ায়ী এই সাসপেনশন করা হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ।
সোমবার বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব আনে বিজেপি। মূলতঃ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রতি স্বরস্বতী পুজোয় বাধাদান করা হয়েছে এবং হিন্দুদের স্বাধীনভাবে ধর্মাচারনে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিলো বিজেপি। অধ্যক্ষ সেই প্রস্তাব পাঠ করতে দিলেও আলোচনার জন্য গ্রহণ করেন নি। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল মুলতুবি প্রস্তাব পাঠ করার পর অধ্যক্ষ আইএসএফ বিধায়ক নৌসাদ সিদ্দিকীর আনা দৃষ্টি আকর্ষনী প্রস্তাব পাঠ করতে বলেন। তখনই বিরোধী দলনেতা সহ বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শুরু হয় হই হট্টগোল। এই অবসরে এক সময় দেখা যায় বিরোধী দলনেতা কিছু কাগজ ছিঁড়ে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তারপর কিছুক্ষণ শ্লোগান দেওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াক আউট করেন। সেই সময় শাসক দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ অধ্যক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি মোশন আনার কথা বলেন। অধ্যক্ষ তাঁকে অনুমতি দিলে নির্মল ঘোষ বলেন যেভাবে বিরোধী দলনেতা কাগজ ছুঁড়ে অধ্যক্ষের চেয়ারকে অপমান করেছেন এবং অধ্যক্ষের চেয়ারের দিকে তেড়ে গিয়েছেন, তাই এই সভা থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হোক। মুখ্য সচেতক বিরোধী দলনেতা সহ মোট চার জনের নাম করেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তখন হাউসে উপস্থিত সদস্যদের (তখন মুলত তৃনমূল বিধায়করাই হাউসে ছিলেন) কাছে জানতে চান। ধ্বনি ভোটে তাঁরা সাসপেনশনের পক্ষে মত দিলে অধ্যক্ষ সাসপেনশনের কথা ঘোষনা করেন। প্রসঙ্গত ২০২২ সাল থেকে এই নিয়ে মোট ৮ বার অধিবেশন কক্ষ থেকে সাসপেন্ড হলেন বিরোধী দলনেতা যা রাজ্য বিধানসভায় নজির। এর আগে কখনও কোনো বিরোধী দলনেতা এতবার সাসপেন্ড হন নি।
এদিকে সাসপেনশন এর খবর পাওয়ার পর বিধানসভার গেটের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, “২০২২ সাল থেকে এই নিয়ে আমাকে মোট আট বার সাসপেন্ড করা হলো। এইভাবে বিজেপির চার বিধায়ককে সাসপেন্ড করার ঘোষণায় বিজেপি পরিষদীয় দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন যখন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার হাউসে (অধিবেশন কক্ষে) আসবেন, বিজেপি বিধায়করাও তাঁকে বয়কট করবেন।”