ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক: দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সারা ভারত বর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব রয়েছে। অভিযোগ শূন্যপদ ফাঁকা থাকলেও সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না বলে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী ও আইনজীবী সুখেশ ঘোষ মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতে জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার সেই নির্দেশিকা মেনে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়া সত্বেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার শিক্ষক নিয়োগের গড়িমসী করছে বলে অভিযোগ।
আইনজীবীদের আর অভিযোগ,শীর্ষ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা কার্যকর করছে না রাজ্য সরকার। তাই বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক পঠন-পাঠন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এবং বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এগুলো খতিয়ে দেখে মহামান্য শীর্ষ আদালত আরও কঠোরভাবে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে বলেও জানান আইনজীবীরা।
মহামান্য শীর্ষ আদালত ২০২১ সালের ২৮ শে অক্টোবর এবং ২০২৪ সালের ১২ ই মার্চ নির্দেশ দিয়েছিল বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে। যেখানে প্রতি ১০ জন প্রাথমিক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একজন শিক্ষক এবং মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রতি ১৫ জনে একজন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে রাজ্য সরকার গুলিকে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশিকা পশ্চিমবঙ্গ সরকার সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে পালন করা হচ্ছে না বলে মামলাকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এ বিষয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে তারা সুপ্রিমকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৯৬ জন পড়ুয়া রয়েছে যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে এখনো পর্যন্ত পালন করা হয়নি বলেও অভিযোগ।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ প্রতিটি রাজ্যকে আগামী ২৮ শে মার্চের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে, মোট অনুমোদিত কতজন শিক্ষকের প্রয়োজন। সেই অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি যারা বর্তমানে সমগ্র শিক্ষা মিশনে কর্মরত অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন তাদের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে তাদের স্থায়ীকরণের নিশ্চিত করতে হবে।
মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৫ই জুলাই।