আদালতের পূর্ণ অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত চাকরিতে ফিরতে পারবেন না দূর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া কোনো সরকারি আধিকারিক বা কর্মি। পরিষ্কার জানিয়ে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক- দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত কোনও সরকারি অফিসারকে যতক্ষণ না তিনি উচ্চতর আদালত থেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন, ততক্ষণ তাঁকে পুনরায় চাকরিতে ফিরতে দেওয়া চলবে না। বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে এমনটাই জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সন্দীপ মেহতা ও বিচারপতি প্রসন্ন বি ভারালের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই মন্তব্য করেন।
রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের (RPF) এক ইন্সপেক্টরের আবেদন খারিজ করে দিয়ে শীর্ষ আদালত সাফ জানায়, “এই ধরনের দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের কাজে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হলে তা জনগণের আস্থার ওপর বড় আঘাত হবে।”
বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, “কেন একজন দোষী সাব্যস্ত সরকারি আধিকারিককে আবার চাকরিতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হবে? এতে প্রশাসনিক ব্যবস্থার ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে এবং ডিপার্টমেন্টের সৎ আধিকারিকদের অপমান করা হবে।”
ঘটনার প্রেক্ষিতে জানা গিয়েছে, গুজরাটের একটি ট্রায়াল কোর্ট ওই ইন্সপেক্টরকে ঘুষ নেওয়ার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়। পরবর্তীকালে গুজরাট হাইকোর্ট তাঁর সাজা স্থগিত করলেও দোষী সাব্যস্ত করার সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেনি।
আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী নীতিন কুমার সিনহা সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া বা নেওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। তাই দোষী সাব্যস্ত করার সিদ্ধান্ত খারিজ করে তাঁকে চাকরিতে পুনঃস্থাপনের অনুমতি দেওয়া হোক।
কিন্তু আদালত ‘কেসি সারিন বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া’ মামলার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে জানায়, “একজন সরকারি কর্মচারীকে শুধুমাত্র এই কারণে চাকরিতে রাখা যায় না যে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। জনস্বার্থ এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা রক্ষার্থে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ আবশ্যক।”
পরিশেষে, বেঞ্চ আবেদন খারিজ করে দেয় এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, দুর্নীতিতে দোষী সাব্যস্ত কোনও সরকারি কর্মচারী আদালতের পূর্ণ অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।