শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার এমন নারকীয় পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে তার জেরে প্রাণ হারাতে হল উত্তরপ্রদেশের এক মহিলাকে। বিয়ের দশ বছর পরেও যে পণের জন্য অত্যাচার করা যায় তা ভেবেই শিউরে উঠছেন সকলে। এই ঘটনা আরও একবার প্রকাশ্যে এনে দিল যোগীরাজ্যের নারীদের নিরাপত্তাবিহীনতাকে।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ বিয়ে হয়ে গিয়েছে দশ বছর, এই দশ বছর ধরেই ভয়াবহ নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে এই মহিলাকে। শেষ মেষ অত্যাচারের মাত্রা এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছল যে গরম ইস্ত্রি দিয়ে যৌনাঙ্গে ছ্যাঁকা দেওয়া হল তাঁকে। মৃত্যু হয়েছে তাঁর। একটি বুলেট মোটরবাইক ও একটি মোষ চাওয়া হয়েছিল পণে এবং সেটা দিতে না পারায় গৃহবধূর ওপর অমানুষিক অত্যাচারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় শিউরে উঠছে দেশবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। দাবি পূরণ করতে পারেনি শ্বশুরবাড়ি। আর সেই রাগেই স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করার পর যৌনাঙ্গে ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে তা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। শুধু যে মহিলার স্বামী এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাই নয় শ্বশুরবাড়ির বাকি সদস্যদের দিকেও উঠছে অভিযোগের আঙুল। ২০২৫ সালে এসেও যে পণের জন্য কাউকে প্রাণ দিতে হয় সেকথা চিন্তা করেই স্তম্ভিত সকলে। জানা গেছে মহিলার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির মোট পাঁচ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও ঘটনার পর থেকে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে অভিযুক্তরা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁছে তল্লাশি চলছে। খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করা হবে অভিযুক্তদের।
পুলিশ পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সঙ্গীতার মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না হওয়ার ফলে মৃতদেহ থেকে ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশের অনুমান, লোহার গরম ছ্যাঁকার জ্বলন সহ্য করতে না পেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সঙ্গীতার। দশ বছর আগে বানপুরা গ্রামের বাসিন্দা বান্টি কুমারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সঙ্গীতা নামে এই মহিলার। তাঁদের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বান্টি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা একটি বুলেট মোটর সাইকেল ও একটি মোষ পণ হিসাবে দাবি করতে শুরু করে। সেই দাবি পূরণ করতে না পারলে সঙ্গীতাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া শুরু হয়। যদিও সব কিছুকে উপেক্ষা করে সন্তানদের নিয়ে স্বামীর ঘরেই থাকতেন সঙ্গীতা। গত মঙ্গলবার এই নিয়ে অত্যাচার চরমে ওঠে। লোহার ইস্ত্রী দিয়ে সঙ্গীতার সারা শরীরে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। তাঁর যৌনাঙ্গতেও ছ্যাঁকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।