কলকাতা: ফেসবুকে নারী সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য পোস্ট করায় শাস্তির মুখে পড়তে হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক কনক সরকারকে। প্রায় দুই দশক ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সঙ্গে জড়িত থেকেও তিনি কিভাবে এই ধরনের মন্তব্য করেন! এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে সমাজের সর্বস্তরে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ফেসবুকে কুমারী মেয়েদের ‘ছিপি আঁটা বোতল’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক। তিনি ফেসবুকে ইংরাজীতে যে কথাগুলি পোষ্ট করেছেন তার বাংলা করলে কিছুটা এরকম হয়,-“ছেলেরা বোকা বনে যায়। তারা স্ত্রী হিসাবে যাকে পেল সে কুমারী কি না তা বুঝতে পারে না। কুমারী মেয়েরা হলো ছিপি আঁটা বোতল বা সিল করা প্যাকেটের মতো। কেউ কি ছিপি খোলা ঠান্ডা পানীয় বোতল অথবা প্যাকেট ছেঁড়া বিস্কুট কিনবে? স্ত্রীর ব্যাপারটাও সেরকম। একটি মেয়ে শারীরবৃত্তীয়ভাবে জন্ম থেকেই ‘সিলড’, যতক্ষণ না তা খোলা হচ্ছে। ” পোস্টটি ফেসবুকে আসতেই তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অধ্যাপক কনক সরকার অবশ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, রবিবার নিছক মজার বশেই তিনি এই পোস্টটি লিখেছেন ফেসবুকে। এর জন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। ফেসবুকে করা পোস্টেটিকে ‘মূল্যবোধ ভিত্তিক সামাজিক পরামর্শ’ ছিল এমনটাই দাবি করেন ওই অধ্যাপক। নারীর সতীচ্ছদ যে কোন কারণেই ভেঙে যেতে পারে, এটা বৈজ্ঞানিক সত্য। নারী আন্দোলনের কর্মী অধ্যাপক শ্বাশতী ঘোষ ওই ফেসবুক কমেন্ট নিয়ে মন্তব্য করতে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে এমনটাই বলেছেন। ফেসবুকে পোস্ট নিছক কৌতুকের ছলে একথা বললেও আসলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাসে ছাত্রীদের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরনের অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। এমনকি ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। কনক বাবুর সহ অধ্যাপক ডঃ ওম প্রকাশ মিশ্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরণের বক্তব্য, কটু মন্তব্য, নারী বিদ্বেষী অবস্থান অনেক দিন ধরেই এই শিক্ষক পোষন করে আসছেন। এটা নিয়ে একটা চাপা অসন্তোষ ছিলই। ছাত্রছাত্রীরা আগেও অনেকবার বলেছে। এখন ছাত্র আর শিক্ষকরা আলোচনা করে ঠিক করবো – কী করা হবে।” শুধু যে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ছাত্রছাত্রী বা সহকর্মীরা অধ্যাপক সরকারের সমালোচনা করছেন, তা নয়। সামাজিক মাধ্যমেও এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। এই ঘটনায় বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য ছাড়াও ক্লাসে ছাত্রীদের প্রতি অসম্মানজনক আচরনের দায়ে শাস্তি স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ক্লাস নেওয়া থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করে। একজন অধ্যাপকের নারী ও সমাজ সম্পর্কে এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি মধ্য যুগীয় বলে মনে করছে শিক্ষা মহল।
Facebook
Instagram
Twitter
Rplus is most proud of how its work impacts the real world and how it is using its powerful reach to campaign for and with the people of Bengal.
Recent News
- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও নেই কোনও পুলিস কমপ্নেন সেন্টার! স্বরাষ্ট্র সচিবের রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
- বারো ক্লাস বা দ্বাদশ শ্রেনীর পরীক্ষা পাশ না করলে মুসলিম মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না, জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে।
- চাকরির জটিলতা কাটানোর জন্য দুর্গাকে বলি ভাসুরের
- প্রথম দফায় স্পর্শকাতর বুথ ৭৩৭ টি। সবচেয়ে বেশি জলপাইগুড়ি আসনে
- রুটের অনুমতি ছাড়াই রমরমিয়ে চলছে বাস কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ হাই কোর্টের।