কলকাতা: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নিউটাউনের নতুন ক্যাম্পাসে বেশ কিছু বিভাগ স্থানান্তরীত করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের টেকনোলজির সব বিভাগ স্থানান্তরিত হবে নিউটাউনে। উপাচার্য জানিয়েছেন, “আমরা একটা ৫.৫০৩ একরের জমি পেয়েছি। সেই দলিল তৈরি হয়ে গেছে। গত সমাবর্তনে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ কোটি টাকা দেন অনুদান হিসাবে। তাই দিয়ে সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একটা ইন্টিগ্রেটেড ক্যাম্পাস করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ও টেকনোলজির সব ফ্যাকাল্টিগুলিকেই নিউচাউনের প্রস্তাবিত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। স্নাতকোত্তর এক জায়গায় পড়তে হবে আবার অন্য জায়গায় গবেষণা করা সম্ভব নয়। আর এই নতুন ক্যাম্পাসের নাম হবে নিউ ইন্টিগ্রেটেড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যাম্পাস অফ ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালকাটা।” সল্টলেকের টেকনোলজি ক্যাম্পাস ছাড়াও বালিগঞ্জ ও রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের সব বিভাগকে সরিয়ে নিউটাউনের প্রস্তাবিত নতুন ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে তিনটি ক্যাম্পাসের বিভাগগুলিকে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে দুটি শতাব্দী প্রাচীন। বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ বা তারকনাথ পালিত শিক্ষা প্রাঙ্গণ ও রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ বা রাসবিহারী বসু শিক্ষা প্রাঙ্গণ এই দুই ক্যাম্পাসের বিল্ডিং-এর বেহাল দশা। পঠনপাঠন চলাকালীন ক্যম্পাস মেরামতের কাজ সম্ভব নয়। তাই দুটি ক্যাম্পাসের সব বিভাগই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে নিউটাউনে।
অন্যদিকে সল্টলেকে ন্যানো ক্যাম্পাসকে ইন্টারন্যাশনাল গেস্ট হাউস করতে চলেছে বিশ্বাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও স্থানান্তরের পর বালিগঞ্জ ও রাজাবাজার ক্যাম্পাসের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নতুন ক্যাম্পাসে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বন্দোবস্ত করা হবে। নিউটাউন ক্যাম্পাসটি কী ভাবে তৈরি করা হবে তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তির কী কী সুবিধা থাকছে নতুন ক্যাম্পাসে? সূত্রের খবর, প্রতি তলায় ২০ হাজার স্কোয়ার ফুটের মতো জায়গা থাকছে। থাকছে অধ্যাপকদের জন্য আলাদা ল্যাবরেটরি। পাশপাশি টাওয়ার করার পরিকল্পনা রয়েছে। পঠনপাঠনের সুবিধার্থে শিক্ষকরা ক্লাসরুম, প্র্যাকটিক্যালের জন্য ল্যাবরেটরি, মিউজ়িয়াম, সেমিনার রুম, অফিস রুম, বিভাগীয় প্রধানের রুম, স্টোর রুম, শিক্ষকদের জন্য ল্যাবরেটরি, স্পেশাল পেপারের জন্য রুম, অ্যানিম্যাল হাউজ় ইত্যাদি চেয়েছেন, সেই প্রসঙ্গেও চিন্তা ভাবনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই ক্যম্পাসকে গ্রিন ক্যাম্পাস করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন ক্যাম্পাসের কাজ করবে পি.ডাব্লু.ডি। তবে এত বড় প্রকল্প কবে শেষ হবে তার সময়সীমা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশা, নতুন ক্যাম্পাস তৈরি হয়ে গেলে একই ছাদের নিচে আসতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সায়েন্স ও টেকনোলজির বিভাগ। ফলে নতুন ক্যাম্পাসটি একটা পরিণত ক্যাম্পাস হবে বলে জানানো হয়েছে।