সিউড়ি: বিভূতিভূষণের শঙ্কর পৌঁছতে পারেনি চাঁদের পাহাড়ে। অধরা থেকে গেছে সেই স্বপ্ন, আর বাঙালির মনে সেখান থেকেই জাগেছে চাঁদের পাহাড় জয়ের নেশা। সাইকেলে চড়ে সেই চাঁদের পাহাড়ে পাড়ি দিয়েছিল সিউড়ির ছেলে উজ্জ্বল পাল। ২৬ জানুয়ারি মাউন্ট কিলিমাঞ্জেরোর শীর্ষে পৌঁছে ভারতের জাতীয় পতাকা তুললেন তিনি। পাশাপাশি বিশ্বের কাছে বার্তা দিলেন সবুজায়নের। জন্ম সিউড়ি নতুন ডাঙ্গালপাড়ায়। কৃষিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে চাকরি শুরু করে একটি বেসরকারি সংস্থায়। তবে সেটাও বেশিদিন নয়। অভিযানের নেশায় চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন দেশ ভ্রমণে। মিশরের রাজধানী কায়েরো থেকে ২৮ নভেম্বর ২০১৮-এ সাইকেলে চেপে কিলিমাঞ্জেরোয় পাড়ি দেন উজ্জ্বল। এরপর সুদান, ইথিওপিয়া, কেনিয়া পেরিয়ে ১৬ জানুয়ারি তানজানিয়ায় প্রবেশ করেন তিনি। তার এই দীর্ঘ যাত্রা পথের সঙ্গী ছিল তার সাইকেল চেতক। অনেক পথের ক্লান্তি পেড়িয়ে অবশেষে ২৬ জানুয়ারি স্বপ্নপুরণ হয় তার। ১২ হাজার ফুট পেরিয়ে অবশেষে কিলিমাঞ্জরোর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ উহুরুতে পা রাখলেন উজ্জ্বল পাল। প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে সেখানে পতাকা উত্তোলন করে তিনি চাঁদের পাহাড় জয় উজ্জাপন করলেন। জয়ের কথা সিউড়ির বাড়িতে পৌঁছতেই বাঁধ ভাঙা উচ্ছাসে ভেসে যায় তার পরিবার। ছোটবেলা থেকেই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় উজ্জ্বল।এই শৃঙ্গজয় তার কাছে খুব সহজ ছিল না। তার এই সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশ বিদেশের পর্বতারোহীরা। শুধু শৃঙ্গ জয় করেই তিনি থেমে থাকতে চান না। তার এখন লক্ষ্য পৃথিবীকে দূষণ মুক্ত করা ও সবুজায়নের বার্তা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া। উজ্জ্বলের লক্ষ্য পৃথিবীকে উষ্ণায়ণের হাত থেকে বাঁচানোর লড়াইয়ে যোগ দিতে অনেক গাছ লাগানো প্রয়োজন। গাছ লাগানোর উপকারিতা মানুষের মনে গেঁথে দিতেই তাঁর এই অভিযানের নাম ‘গ্রিন অন হুইল’। পৃথিবীর সমস্থ মানুষের উদ্দেশ্যে তার বার্তা, সারা জীবনে প্রত্যেকে অন্তত্য একটি গাছ লাগান এবং তাকেই লালন পালন করে বৃক্ষে পরিনত করুন। উজ্জ্বলের কিছুদিন আগেই সেভেন সামিট ( সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ ) ও সেভেন ভলক্যানো ( সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি ) আরোহণ করে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলেছেন হাঘালি পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত। উজ্জ্বলের সাফল্যে তিনিও উচ্ছসিত হয়েছেন। এদিন শৃঙ্গজয়ে পর ফেসবুকে ‘ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে পৌঁছে গেলাম, দেখতে পেলাম চাঁদের পাহাড়।’ এই লাইনটি লিখে তার অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে পোস্ট করেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শঙ্কর’ পারেননি, কিন্তু সিউড়ির উজ্জ্বল পেরেছেন জীবন্ত শঙ্কর হয়ে উঠতে। কখনও দেশের মধ্যে, আবার কখনও দেশের বাইরে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন তিনি। পাড়ি দিয়েছেন দুর্গম পথ। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, জার্মানি, তুরস্ক, গ্রিস, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নানা দেশ ঘুরে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। এবার তিনি হলেন ‘চাঁদের পাহাড়’ সত্যিকারের শঙ্কর।
Facebook
Instagram
Twitter
Rplus is most proud of how its work impacts the real world and how it is using its powerful reach to campaign for and with the people of Bengal.
Recent News
- উত্তরে বৃষ্টি, দক্ষিণে তাপপ্রবাহ রাজ্যে
- Loksabha Election 2024 : সাত সকালেই সন্ত্রাসের অভিযোগ। ঘটনাস্থল সেই কোচবিহার
- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও নেই কোনও পুলিস কমপ্নেন সেন্টার! স্বরাষ্ট্র সচিবের রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
- বারো ক্লাস বা দ্বাদশ শ্রেনীর পরীক্ষা পাশ না করলে মুসলিম মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না, জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে।
- চাকরির জটিলতা কাটানোর জন্য দুর্গাকে বলি ভাসুরের