Date : 2024-04-17

সাহিত্য সম্রাটও নাকি ফেল করেছিলেন বাংলায়!

ওয়েব ডেস্ক: সাহিত্যে সামান্য হাতেখড়ি না হলে পার করা যায় না স্কুল গন্ডি। একথা বলা বাহুল্য বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সৃষ্টি ছাড়া বাংলা সাহিত্য অসম্পূর্ণ। “কপাল কুন্ডলা” বা “দেবী চৌধুরাণী “-র মতো সাহিত্যের পাতা উল্টে দেখাও বেশ কঠিন অধিকাংশ মানুষের কাছে। ভাষা সাহিত্যে তাঁর অতুলনীয় পান্ডিত্য। ইতিহাস বলে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বাঙালিদের মধ্যে প্রথম গ্রাজুয়েট। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেস নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়েছিল বি.এ ফাইনাল পরীক্ষায়। এবার এই কথা শুনলে হয়তো অনেকেই আকাশ থেকে পড়বেন, তিনি বি.এ পরীক্ষায় বাংলা ভাষার পত্রে ফেল করেছিলেন। ভাবা যায়! বাংলা সাহিত্যে যার অগাধ পান্ডিত্য তিনি কিনা বাংলায় ফেল! এই পরীক্ষায় পরীক্ষকের নাম শুনলে চোখ কপালে উঠবে অনেকেরই। পরীক্ষক স্বরূপ ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

প্রসঙ্গত, সেই বছর গ্র্যাজুয়েশনের পরীক্ষায় বসেছিলেন মাত্র তিনজন পরীক্ষার্থী। আর তাঁরা সবাই ফেল করেন গ্র্যাজুয়েশনের ফাইনাল পরীক্ষায়। অবিশ্বাস্য ভাবে এই অকৃতকার্যদের তালিকায় শীর্ষে ছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম। এই অমর্যাদায় আহত হয়ে তিনি নাকি পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহের দাবিকে অনেক ভাবে বিরোধীতাও করেছিলেন এবং ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ উপন্যাসটি তিনি রচনা করেন। এবার অনেকের মনেই প্রশ্ন আসবে বঙ্কিমচন্দ্রের মতো একজন প্রতিভাবান মানুষ বাংলার মতো বিষয়ে ফেল করলেন কিভাবে? এর উত্তর একটাই এই সময় বাংলা ভাষা আধুনিক ছিল না বরং অনেকটাই ছিল সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফলে এর ব্যাকরণ ভাগের অনেকটাই ছিল কঠিন সংস্কৃতের অংশ যা মুখস্ত করা ছাড়া উপায় ছিল না। মুখস্ত করতে গিয়েই হয়েছিল যত বিপত্তি। পরবর্তীকালে বাংলার সেই প্রশ্নপত্রটি একটি জনপ্রিয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবনের এই সত্য ঘটনাটি তুলে ধরেছিলেন আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। কিন্তু তিনি নিজেও সমাধান করতে পারেননি এই প্রশ্নপত্র। বহু চেষ্টা করে এখনও পর্যন্ত এই প্রশ্নপত্রের ১৬ নম্বরের বেশি কেউই উত্তর লিখতে পারেননি। প্রশ্নপত্রের কাছে হার মেনেছিলেন বহু তাবড় সাহিত্য পন্ডিতরা।