Date : 2024-03-29

অমর একুশে রঙিন আলপনায় সাজলো শান্তিনিকেতন

শান্তিনিকেতন: “মোদের গরব মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা” একবাক্যে এক হয়ে যায় দুই বাংলা। ঘুচে যায় সব ভেদাভেদ। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার সম্মান দিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে রক্তে রাঙা হয়েছিল। সেই দিনকে স্মরণ করে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করা হয়।

১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কো বাংলা ভাষার জন্য এই বলিদানের দিনকে মনে রেখে তাকে মর্যাদা দিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন শুরু করে। তারপর থেকে বাংলা ভাষার সম্মানে সারা বিশ্বের দরবারে এই দিনটি পালিত হয় ভাষা শহিদ দিবস হিসাবে। এই দিনকে স্মরণ করে দুই বাংলার মানুষ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শহিদের স্মরণ করেন।

বাংলাদেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ২১ স্মরণে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছরের মতো এই বছরও কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে মহাসমারহে পালিত হল ভাষা দিবস। এদিন সকালে বিশ্বভারতীর আন্তর্জাতিক অতিথি নিবাস থেকে নবনির্মিত বাংলাদেশ ভবন পর্যন্ত পদযাত্রা করেন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা, ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, অধ্যাপক ও কর্মীসভার সদস্যরা।

প্রতি বছরই বিশ্বভারতীতে পাঠরত বাংলাদেশের পড়ুয়ারা মাতৃভাষা দিবস পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ বছর বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ভবনেই সকালে শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই একটি অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করে সেখানে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশের উপদূতাবাসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন শাহনাজ আখতার রানু। শান্তিনিকেতন ভাষা দিবসে দুই বাংলার মৈত্রী মঞ্চের রূপ নেয়। বাংলাদেশ ভবনের সামনে রঙিন আলপনা আর ফুল দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশ ভবন। বাংলা ভাষার জন্য লড়াই করে শহিদ রফিক, সালাম, বরকতদের উদ্দেশ্যে পালিত হয় ‘অমর একুশে’। শুধু বাংলা ভাষায় নয় সব দেশের মাতৃ ভাষাকে সম্মান জানিয়ে এদিন পালন করা হয় ভাষাদিবস।

চিন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, ইরানের পড়ুয়ারা তাঁদের মাতৃভাষায় গান করেন এই দিন। কিছু গানের ইংরেজি অনুবাদও পরিবেশিত হবে। শুধু দেশের মধ্যেই ‘অমর একুশে’ পালন সীমাবদ্ধ থাকে না। বাংলাদেশ পড়ুয়াদের কথায়, বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবন হওয়ায় এক টুকরো বাংলাদেশ পেয়েছেন তারা। এই জায়গাতেই এ বছর শহিদবেদী তৈরী করে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ করতে পেরে তারা খুশি।