ওয়েব ডেস্ক: মন, মানুষের এমন একটি অংশ যা শরীরে ঠিক কোন অংশে অবস্থান করে কেউ জানে না। অথচ এই মনের কথাই শুনে চলে আমাদের গোটা শরীরটা। মন অশান্ত হলে তার প্রভাব পরে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। আর এই মানসিক অবসাদ এখন গ্রাস করেছে গোটা বিশ্বের ৯০ শতাংশ মানুষকে। যে কোনো স্ট্রেস বা চাপ, ট্রমা, আপনজনের মৃত্যু এবং এরকম আরো বিভিন্ন পরিস্থিতি ব্যক্তিকে বিষণ্ণতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। মানসিক অবসাদে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে ব্যক্তির। বিশ্বের ২০ টি দেশের প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে তারা কোন না কোন ভাবে মানসিক অবসাদ গ্রস্থ। অনেকে এর জন্য দায়ী করছেন ব্যস্ততম জীবনের জন্য আপনজনেদের থেকে অনেকটা সময় দূরে কাটানো। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান শোনাচ্ছে অন্য কথা। সম্প্রতি একটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পত্রিকায় মার্কিন গবেষকরা দাবি করেছেন জিনেই নাকি লুকিয়ে আছে মানসিক বিষণ্ণতার চাপিকাঠি। মার্কিন চিকিৎসা গবেষকদের মতে, যাদের মধ্যে জিন গত ফারাক যত বেশি তাদের মধ্যে ডিপ্রেশানে ভোগার প্রবনতা তত বেশি। তবে বিষণ্ণতার সঙ্গে জিনের এই সম্পর্ক আবিষ্কার করতে পারলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে যে বিশাল পরিবর্তন আসতে পারে সে বিষয়ে সহমত মার্কিন চিকিৎসকরা। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অকারণ মনখারাপ, খিদে না পাওয়া, উদ্যামহীনতা এমনকি যৌন সঙ্গমের অনিচ্ছা ইত্যাদি ক্রমশ মানুষের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করতে থাকে। বিষণ্ণতা মানুষের মধ্যে নিয়ে আসে ভয়। চিকিৎসা বিজ্ঞান কিন্তু বলছে জিনগত কারণে বংশানুক্রমিক ভাবে এই অবসাদের অসুখ প্রবাহিত হতে পারে আপনার বংশধরেদের মধ্যে। আপনি হয়তো এমনই কোন সমস্যায় ভুগছেন অথচ জানেনই না আপনার পূর্বপুরুষদের মধ্যেই কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানসিক বিষন্নতার কথা মুখ ফুটে বলতে পারে না কেউই। নেচার নিউরোসাইয়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত বিষণ্ণতা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এডিনবোরো ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লিনিকে ব্রেইন সায়েন্সেস এর অধ্যাপক এন্ড্রিউ ম্যাক্লনটোশ। গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বায়োব্যাঙ্ক, দি সাইকিয়াট্রি জিনোমিক্স কনসোর্টিয়াম, পার্সোনাল জেনেটিক্স ২৩ এন্ড মি, এবং রিসার্চ ইঞ্জিনিয়ারিং নামক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকেও ডিএনএ-র নমুনা নেওয়া হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে সংগৃহীত জিনের নমুনা গুলির মধ্যে প্রায় একশোটির বেশি জিনের সন্ধান পাওয়া গেছে যেগুলির মধ্যে ভিন্নতা দেখা গেছে। সমীক্ষা বলছে এই জিনের অধিকারী মানুষরাই বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি দেখা যায়। নমুনায় দেখা গেছে যাদের জিনগত ভিন্নতা রয়েছে তাদের ব্রেইনের নার্ভের কোষগুলি মস্তিষ্কের সামনের অংশের সঙ্গে যুক্ত থাকে। বিশেষ করে ধূমপায়ী মানুষদের মধ্যে একই রকম দেখতে ডিএনএ গঠন পাওয়া গেছে, যা পরীক্ষার ফলে প্রমাণিত হয়েছে অবসাদের কারণ ভিন্ন হলেও অবসাদগ্রস্থতা ধূমপায়ী মানুষের জীবনে একটি সাধারণ রোগ। এছাড়া বিষণ্ণতার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে স্নায়ুবিক পীড়ার। স্নায়ুবিক দুর্বলতায় আক্রান্ত মানুষের মধ্যে অবসাদ দেখা যায়। যে কোন কাজের স্ফুর্তি হারিয়ে যায় তাদের। তবে এখানেই শেষ নয়, মনোবিজ্ঞানের গবেষণা অনেক দীর্ঘায়িত বিষয়। বাইরে থেকে সিনথেটিক মেডিসিনের মাধ্যমেই যে এই রোগের নিরাময় সম্ভব তা নয়। এই ধরনের রোগের কারণ খুঁজে বের করাই প্রথম চ্যালেঞ্জ, যদি আবার তার সঙ্গে জরিত হয় জিনের গঠনের হিসেব নিকেশ। উদ্বেগ ও বিষণ্ণতার সঙ্গে জিনের কী ধরনের সম্পর্ক রয়েছে সেটি জানতে এখনও আরো বিশদ অনুসন্ধান করতে হবে মার্কিন গবেষকদের।
Facebook
Instagram
Twitter

Rplus is most proud of how its work impacts the real world and how it is using its powerful reach to campaign for and with the people of Bengal.
Recent News
- অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসরের চাকুরির জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ইউজিসি।
- মোহনবাগান সমর্থকদের মিষ্টি মুখ করাতে এবং ক্লাবের পরিকাঠামো উন্নয়নে 50 লক্ষ টাকা দেওয়া হবে সরকারের তরফ থেকে
- দুর্গাপুরে একই পরিবারের চার জনের রহস্যমৃত্যুতে হাইকোর্টে মামলা।
- শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
- লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন। এক মাসে সাত সভা অভিষেকের