কলকাতা: ভূতের আতঙ্কে মানুষ কাঁপে। ভূত নয় ভূতপ্রেমীদের আতঙ্কে কাঁপছে হানাবাড়ি শুনেছেন! শোভাবাজার ঘাটের কাছে পুতুলবাড়িতে ভূতকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে মানুষ! বর্তমান প্রজন্মের কাছে স্মার্ট ফোন আর স্যোশাল মিডিয়া এতটাই শক্তিশালী যে এক মুহুর্তের জন্য তারা হাত ছাড়া করতে চায়না এই গ্যাজেটটি। স্যোশাল মিডিয়া যেখানে কোন খবর ভাইরাল হয়ে গোটা বিশ্বের কাছে ছড়িয়ে পড়তে কয়েক মুহুর্ত সময় লাগে। তবে বিজ্ঞান প্রযুক্তির যতই উন্নতি হোক না কেন, অপ্রাকৃতিক বস্তুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ ক্রমশ বেড়েছে বইকি কমেনি। এমন অনেক লোক আছেন যাদের ইউটিউব বা গুগল সার্চ লিস্টে প্রথমেই ভৌতিক খবর, হানা বাড়ির গল্প বা রহস্য সংক্রান্ত নিত্য নতুন বিষয় ঘুরতে দেখা যায়। আর এই সংক্রান্ত ভিডিও আপলোড নানা খবর আসতেই থাকে তাদের কাছে।
তেমনই কান্ড ঘটল শোভাবাজার এলাকায় একটি শতাব্দী প্রাচীন বাড়িকে ঘিরে। ঘিঞ্জি শহর কলকাতায় যেখানে মানুষ থাকার জন্য একচিলতে জায়গা মেলা কঠিন সেখানে নাকি আস্ত একটা বাড়ি দখল করে বসে আছে ভূত। ইউটিউবে হন্টিং হাউস লিখে সার্চ করলেই নাকি টপ লিস্টে উঠে আসছে শোভাবাজার ফেরিঘাটের কাছে হরচন্দ্র স্ট্রিটের পুতুলবাড়ির নাম। বার্ধক্যপ্রাপ্ত এই বাড়ির আনাচে কানাচে বাস করছে জমিদারের অত্যাচারে মৃত নারীদের প্রেতাত্মা।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বর্তমানে এই বাড়ির বেশির ভাগটাই দখলে আছে ভাড়াটেদের। ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা বসবাস করছে এই বাড়িতে। আর তাদের সাথেই নাকি বাস করছে ভূতও। ঠিক যেন রূপালী পর্দার মতো জ্বলজ্যান্ত ভূতের সঙ্গে বাস করছে মানুষ। কিন্তু তাতে কি ভূতেদের শান্তি আছে? সোশ্যাল মিডিয়ার খবরের দৌলতে সেই ভূত দেখতে দিনে দুপুরে উৎপাত শুরু করেছে ভূতপ্রেমী মানুষের দল। আর তার জেরেই অতিষ্ট হয়ে উঠেছে বাড়িতে বসবাসকারী মানুষগুলো। বাড়িতে থাকা ভাড়াটেদের অভিযোগ,ভূতের খবর পেয়ে রাত-দুপুরে দরজায় কড়া নাড়ছে মানুষ।
হানা বাড়িতে এখন ভূতের থেকেও মানুষের হানায় অতিষ্ট হয়ে ভাড়াটে থেকে পাড়া-পড়শিরা। তাদের দাবি এই বাড়ির চেহারা এইরকম হলেও এখনো পর্যন্ত কেউ সেখানে ভূতের চিহ্নটুকুও দেখতে পাননি। বাড়ির মস্ত বড় ফটকে নজর কাড়া কারুকার্য আর চারটে বড় পুতুল আছে যা সত্যিই অবাক করার মতো সুন্দর। শুধু বয়সের ভারে ধুঁকছে বাড়ির কাঠামো। তবে এখনো সেখানে বিন্দাস বাস করছে বেশ কয়েকটা পরিবার। আছে বেশ কয়েকটি হোশিয়ারী ব্যবসায়ী। ভূতপ্রেমী মানুষের তাড়না রুখতে ক্লাব থেকে বসানো হয়েছে ব্যানার। কিন্তু কে কার কথা শোনে, মানুষের উঁকিঝুঁকি থেকে নিস্তার নেই বাড়ির মানুষের।