ওয়েব ডেস্ক: একসময় বলেছিলেন, “শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত গোয়ার সেবা করে যাব”। শেষপর্যন্ত যেন সেটাই বাস্তব হল। তেষট্টিতেই থেমে গেল জীবন।
তিনি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর।
দীর্ঘদিন ধরেই অগ্নাশয়ের ক্যানসারে ভুগছিলেন।
রবিবার নিজ বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
রবিবার রাত আটটা নাগাদ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ট্যুইটারে মনোহর পর্রীকরের মৃত্যু সংবাদ দিয়ে শোকপ্রকাশ করেন।
এদিন বিকেল থেকেই মনোহর পর্রীকরের দফতর থেকে জানানো হয়, অত্যন্ত সঙ্কটজনক তিনি।
তারপরই সন্ধ্যায় এল সেই দুঃসংবাদ। গতবছর ফেব্রুয়ারী থেকে লড়াই শুরু।
বেশ কিছুদিন বিদেশে চিকিৎসা চালানোর পর এক মাস দিল্লির এইমসে ভর্তি ছিলেন।
তারপর বাড়িতেই চলছিল চিকিৎসা।
তবে শরীর জুড়ে কর্কট বাসা বাঁধলেও থেমে যায়নি তাঁর কর্মজীবন।
অসুস্থ শরীরেও সামলেছেন দফতরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
কিন্তু এদিন তাতে ছেদ পড়ল।
১৯৫৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর গোয়ায় জন্ম।
মারাঠিতে সেকেন্ডারি পাশ করে বোম্বে আইআইটিতে থেকে ১৯৭৮ সালে ধাতুবিদ্যা নিয়ে গ্রাজুয়েশন করেন।
তিনি খুব অল্প বয়সেই রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন। আরএসএস-এ যোগ দেন। ১৯৮৮-তে যোগ দেন বিজেপিতে।
১৯৯৪ সালে পানাজি কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন তিনি।
২০০০ -এর অক্টোবরে প্রথমবার গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন পর্রীকর।
গোয়ার বেশ কয়েকবারের মুখ্যমন্ত্রী ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পান তিনি।
সেখানেও নিজের ছাপ রেখেছেন তিনি।
২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সেনাবাহিনীর আধুনিকিকরণ।
২০১৬ সালে উরি হামলার প্রত্যাঘাতে প্রথম সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সিদ্ধান্ত নেয় দেশ তাঁর হাত ধরেই।
রাজনীতির ময়দানে প্রতিনিয়ত সাফল্যের মুখ দেখলেও তার ছাপ পড়তে দেননি ব্যক্তিজীবনে।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হলেও দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রী আবাসে থাকেননি তিনি। বাড়ি থেকে বিধানসভায় যাতায়াত করতেন স্কুটারে।
এমনকী গোয়ায় রাস্তার পাশে নিরাপত্তার পরোয়া না করে তাঁকে চা খেতেও দেখেছেন অনেকে।
শেষের কয়েকদিন শরীর সঙ্গ না দিলেও মনের জোরে কাজ করে গিয়েছেন। তা নিয়ে অবশ্য বিতর্কও হয়।
তাঁর মৃত্যুতে দলমত নির্বিশেষে শোক জ্ঞাপন করেন রাজনীতিকরা।
এদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকেই ট্যুইটারে শোকজ্ঞাপন করেন।
আজ বিকেল ৫টায় পঞ্জিমের মিরামায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
তাঁর আগে সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পর্রীকরের মৃতদেহ রাখা হবে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে।
পর্রীকরের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকবেন মোদী।