Date : 2024-04-20

হিমালয়ের বুকে ক্যাফে বেঁধে স্বপ্নের উড়ান নিত্যার

ওয়েব ডেস্ক: স্বপ্নের উড়ান। স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি, কিন্তু তা সফল করতে পারাটাই আসল চ্যালেঞ্জ। প্রতিটা মানুষই ভাবে রোজকার এই জীবন থেকে ছুটি নিয়ে পালিয়ে যাবে। এবং ঘর বাঁধবে কোনো এক দূর দেশে। যেখানে থাকবে না কোনো ডেড লাইন, কোনো বাধা। জীবন কাটবে কোনো দুশ্চিন্তা ছাড়াই। কিন্তু রোজকার ৯-৫টার ডিউটি করে সময় থাকে কই। তারপর সংসার, তার হাজারো দায়িত্ব, কত না পাওয়া, কত অভিযোগ, তার মাঝেই কোথাও যেন একটা চাপা পড়ে যায় সবার ইচ্ছেগুলো।

তবে যদি সেই দূর দেশে গিয়েই কাটানো যেত বাকি জীবন এবং সেখানেই করা যেত রোজগারের ব্যবস্থা। তাহলে কেমন হত। ঠিক এই স্বপ্নই পুরণ করলেন দিল্লির তরুণী নিত্যা বুধরাজা। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই নিজের স্বপ্ন পুরণ করার দায়িত্ব নিয়ে হিমালয়ের বুকে খুললেন একটি ক্যাফে। ইট-কাঠ কংক্রিটের দেওয়ালকে দূরে ফেলে রেখে পাহাড়ের কোলে ক্যাফে বাঁধলেন তিনি। দিল্লি থেকে উত্তরাখণ্ডের সাত্তাল এলাকায় গিয়ে, স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে নিয়ে শুরু করেছেন এই ছোট্ট ব্যবসা।

সমস্ত শহুরে সুবিধা এবং ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়েছেন তাঁরা স্বেচ্ছায়। তাও প্রায় হয়ে গেল আজ পাঁচ বছর! তিনি এর পুরো কৃতিত্বই দিয়েছেন তাঁর বাবাকে। কারণ পাহাড়ের প্রতি তাঁর বাবার অদ্ভুত এক আবেগ ছিল। তিনি চাইতেন পাহাড়ের কোলে এক টুকরো জমি কিনে সেখানকার স্থানীয় পাহাড়ি মানুষদের সঙ্গে ইচ্ছেমতো জীবন কাটাতে। কিন্তু চাকরি আর সংসারের জাঁতাকলে সেটা হয়ে ওঠেনি কখনও। আচমকা মারা গেলেন নিত্যার জীবনের প্রিয়তম মানুষটি। তাঁর বাবা। তবে ভেঙে পড়েননি তিনি।

তাঁর লক্ষে অটল ছিলেন চিরকলই। বাবা চলে যাওয়ার পরে বাবারই স্মৃতিতে উত্তরাখণ্ডের সাত্তালে এসে একটি ছোট্ট ক্যাফে খুলে বসেন নিত্যা। নাম দেন, ‘বাবা’স ক্যাফে’। সঙ্গে বাবার নামেই খোলেন একটি ছোট্ট হোম-স্টে, ‘নবীন’স গ্লেন’। নিত্যার মা-ও দিল্লিতে আর একা থাকতে চাননি। চলে আসেন মেয়ের সঙ্গে। কিছু জীবনও যেন গল্প হয়। আর সেই গল্পের পাতা উল্টে মনের মধ্যে নিভে যাওয়া প্রদীপগুলো যেন আবারও জ্বলতে চায় নতুন বাহানায়। মনে হয় মানুষ পারে না এমন কিচ্ছু নেই। শুধু ইচ্ছে থাকা চাই।