ওয়েব ডেস্ক: হৃদয় মিলল ওঙ্কার-অনুষার।রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা, গ্রিন করিডোরে মাত্র ১৬ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বাইপাস লাগোয়া বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছল হৃদপিণ্ড।
মুম্বই থেকে কলকাতা প্রায় দুহাজার কিলোমিটার অতিক্রম করে মুম্বইয়ের “দিল” এল কলকাতায়। ভোর রাত পর্যন্ত চলা প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারকে ‘সফল’ বলে ঘোষণা করলেন চিকিৎসকেরা। যদিও ৪৪ বছরে অনুষা অধিকারী অস্ত্রোপচারের পরে এখনও ভেন্টিলেশনে আছেন। ৭২ ঘণ্টা না গেলে বিপন্মুক্ত নন এমনই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা।
সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের বাসিন্দা, ১৬ বছরের কিশোর ওঙ্কার লুদ গত ২৬ মে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের গ্লোবাল হসপিটালে। গত ২৮ মে, হাসপাতালের তরফে তাঁকে ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণা করা হয়।সেই কঠিন পরিস্থিতিতেও অঙ্গদানের মানবিক সিদ্ধান্ত নেয় ওঙ্কারের পরিবার।
পরিবারের সম্মতিক্রমে প্রতিস্থাপনের জন্য বের করে নেওয়া হয় তাঁর হৃদ্পিণ্ড।এদিকে বেশকিছুদিন ধরে হার্টের গুরুতর অসুখ ডায়লেটেড কার্ডিও মায়োপ্যাথি নিয়ে ভর্তি ছিলেন দমদমের বাসিন্দা ৪৪ বছর বয়সি অনুষা অধিকারী। তাঁরই শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য আসে ওই কিশোরের হার্টটি।
রাত সওয়া দশটা নাগাদ মুম্বই থেকে যথাসাধ্য দ্রুততায় হাসপাতালে হৃদপিণ্ড পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত গ্রিন করিডোর তৈরি হয় বিধাননগর পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের সমন্বয়ে।সেসময় পরিষেবায় যাতে বিন্দুমাত্র ত্রুটি না থাকে তা নিশ্চিত করতে রাস্তায় উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট সব থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি-রা।
হৃদ্পিণ্ডটি হাসপাতালে পৌঁছে যায় সাড়ে ১০টার কিছু পরে। মাত্র ১৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে পৌঁছে যায় হৃদপিণ্ডটি । শুরু হয় হৃদ্পিণ্ড প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়া।
কার্ডিওথোরাসিক ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ডা. তাপস রায়চৌধুরির নেতৃত্বে রাত তিনটের দিকে শেষ হয় অস্ত্রোপচার। শহরে এই নিয়ে অষ্টম সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।
তবে চিকিৎসকেরা বলছেন অঙ্গদানের সচেতনতা এখনও সাধারন মানুষের মধ্যে সেভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়নি। অঙ্গদানে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করা গেলে আরও বহু মানুষ পেতে পারেন নতুন জীবন।