ওয়েব ডেস্ক: শেক্সপীয়র বলেছিলেন, “নামে কী আসে যায়?” কিন্তু শুধু নামের রাহুগ্রাসেই কী আজও ওরা ব্রাত্য? ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা থাকে স্বাধীনতা লাভ করলেও ভারত-পাকিস্তান দেশভাগের সহিংস ইতিহাস কাঁপিয়ে ছিল দুই দেশের মাটিকে। সেই থেকে আজও দুই দেশের মধ্যে রয়েছে সীমান্ত বিরোধ ও অবিশ্বাস।
৭০ বছর আগের ক্ষত আজও বহন করে বেড়াচ্ছে দুই দেশ। কিন্তু কোন ভিসা পাসপোর্ট ছাড়া হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেখতে পারবেন পাকিস্তানের মাটি। শুনলে অবাক হবেন যেই দেশ ভাগ নিয়ে এত আফশোষ, অসন্তোষ, সেই পাকিস্তান রয়েছে ভারতেই।
কিছুদিন আগেই সাত দফায় শেষ হয়েছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন ২০১৯। সেই নিরিখেই উঠে এসেছে এমন এক গ্রামের কথা যার নাম পাকিস্তানতলা। বিহারের পূর্ণিয়া জেলা থেকে ৩০ কিমি দূরে রয়েছে পাকিস্তানতলা নামের এই গ্রাম। না গুলির শব্দ, ভারি বুটের আওয়াজ নেই, যা আছে তা হল চরম অবহেলা আর অসুখী জীবন। বিহারের পাকিস্তানতলা গ্রামে বাস করেন মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
ভারত সরকার এই পাকিস্তানে এখনও পৌঁছে দিতে পারেনি ন্যূনতম পানীয় জলটুকু। নেই প্রার্থনা করার জন্য কোনও মসজিদ। ছাউনি দেওয়া মাটির দেওয়াল গেঁথে কোনও মতে দাঁড়িয়ে আছে মাথার ছাদটুকু। দেশ ভাগের সময় এই অঞ্চলের বাসিন্দা পাকিস্তানীদের ভারতে ফেলে যাওয়া সম্পত্তিকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে আছে তারা। শতাব্দী কেটে গেলেও আলো পৌঁছায়নি গ্রামে। ভুল পথে একবার ঘুরেও দেখে যান না ভোট প্রার্থীরা। ভোট যায় ভোট আসে বদলায় না পাকিস্তানতলার মানুষের জীবন।
জীবিকা বলতে চাষ-আবাদ ও ছোটখাটো ব্যবসা করে দিন চলে তাদের। স্থানীয়দের কথায়, পরাধীন ভারতের পাকিস্তানের বেশ কিছু মানুষ জীবিকার তাগিদে এই গ্রামে এসেই বসবাস করত। সেই থেকেই বিহারের এই গ্রামের নাম হয়েছে পাকিস্তানতলা। সিঙ্গিয়া পোস্ট অফিসের অন্তর্গত এই পাকিস্তানতলা গ্রামে ১২০০ জন বাসিন্দার মধ্যে ভোটার কার্ড আছে মাত্র ৩৫০ জনের। ভোট হয়তো দিয়েছেন তারা, তাতেও নিরাশাই থেকে গেছে গ্রামের মানুষের মধ্যে।