ওয়েব ডেস্ক: চিকিৎসা শাস্ত্র বলে মাঝে মাঝে ফলাহার বা হালকা খাওয়া দাওয়া করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। আর হিন্দু ধর্মগ্রন্থ, পুরান বলে, এক একটি ব্রত উপবাসের ফলাফল এক এক রকম। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে বর্ণিত আছে আষাঢ় মাসের যোগিনী একাদশী ব্রত উপবাসে মানুষ সর্বপাপ মুক্ত হতে পারেন। যদিও প্রতিটি একাদশী তিথিরই মাহাত্ম্য অপার। এই একাদশী তিথিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। মহাভারতে বর্ণিত আছে শ্রীকৃষ্ণের কাছে এই ব্রতের মাহাত্ম্য জানতে চেয়েছিলেন ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির। এই প্রসঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে একটি পৌরাণিক কাহিনীর কথা উল্লেখ করেন। অলকানগরে পরম শিবভক্ত রাজা কুবের বাস করতেন।
তিনি প্রত্যহ শিব পূজা করতেন। হেমমালি নামে এক মালি প্রতিদিন তাকে মানসসরোবর থেকে ফুল তুলে এনে দিতেন। স্ত্রীর প্রতি কামাসক্ত হয়ে হেমমালি শিব পুজার ফুল ফেলে রেখে আমোদ প্রমোদে উন্মত্ত হয়ে গেলেন। দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ায় মালি এসে পৌঁছল না রাজ ভবনে। রাজা কুবের ক্রুদ্ধ হয়ে দূত প্রেরণ করে মালিকে বন্দি করে নিয়ে আসতে আদেশ দিলেন। হেমমালির হুঁশ ফিরল, সে স্নান না করে পুষ্প ছাড়াই রাজার কাছে উপস্থিত হলেন। ধনরাজ কুবের ওই অবস্থায় হেমমালিকে দেখে প্রচন্ড রেগে গিয়ে কুষ্ঠগ্রস্থ হয়ে দিন কাটানোর অভিশাপ দিলেন।
আর রাজার অভিশাপ পেয়েই শ্বেতকুষ্ঠগ্রস্থ হয়ে পড়লেন হেমমালি। দীর্ঘ রোগ যন্ত্রণায় শাপগ্রস্থ হয়েও তিনি ভগবান শিবের প্রতি বিশ্বাস হারালেন না। কুষ্ঠগ্রস্থ হেমমালি তাঁর পত্নীকে সঙ্গে নিয়ে মার্কেণ্ডেও মুনির আশ্রমে উপস্থিত হলেন।তাঁর অবস্থা দেখে মুনি জিজ্ঞাসা করলেন কী কারণে এমন অবস্থা হল হেম মালির। মুনির প্রশ্নের মুখে সম্পূর্ণ ঘটনার বিবরণ দিলেন হেমমালি। সব শুনে মুনি তাঁকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার রাস্তা বলে দেন।
হেমমালিকে তিনি আষাঢ় মাসের কৃষ্ণপক্ষের যোগিনী একাদশী ব্রত ও উপবাস করার কথা বলেন, এই একাদশীতে পঞ্চশস্য ত্যাগ করে সর্বপাপ থেকে মানুষ মুক্তি পায় একথা হেমমালিকে বললেন মার্কেণ্ড মুনি। হেমমালি তাঁর কথা মতো ব্রত পালন করে ফল লাভ করলেন। শ্রীকৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে বলেছিলেন, এই ব্রত পালন করলে ৮৪ হাজার ব্রাহ্মণ ভোজনের ফল মেলে। সর্বপাপবিনাশকারী যোগিনী একাদশী ব্রতের কথা শ্রবনেও পাপ নাশ হয় এমনটাই বলা আছে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে-
বাংলা তারিখঃ- ১৪ আষাঢ়, ১৪২৬ শনিবার একাদশী ব্রত উপবাস
ইং তারিখঃ- ২৯/০৬/২০১৯।
সময়ঃ- সকাল ঘঃ ০৬/৪৬ মিঃ পর্যন্ত একাদশী থাকবে।