Date : 2024-04-25

হিটলারকে ক্ষতবিক্ষত করতে পেরেছিলেন একমাত্র এই নারী….

ওয়েব ডেস্ক: মহাভারতের “দ্রৌপদী” থেকে ট্রয়ের “হেলেন”, পৃথিবীতে যখনই মহাশঙ্কট নেমে এসেছে তখনই সামনে এসেছে কোন না কোন নারীর নাম। এই দুনিয়ায় কোণে কোণে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে দুই বিশ্বযুদ্ধের ক্ষত চিহ্ন। এর্ডলাফ হিটলার, যার নাম শুনলে এখনও কেঁপে ওঠে সারা বিশ্ব, নির্দয়, সৈরাচারী, রক্ত পিপাসী এই রাষ্ট্র নায়কের দিকে কটাক্ষের আঙুল তোলে সারাবিশ্ব। শুধুই কি ১০০ শতাংশ নিষ্ঠুরতাই ছিল হিটলারের ব্যক্তিত্বে? নাকি কোমল হৃদয়ের কোথাও লুকিয়ে ছিল ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাওয়ার আর্তনাদ।

ইতিহাসের পাতায় কালো অক্ষরে লিখিত আছে হিটলার ইহুদিদের প্রতি হিংসাত্মক আচরণের চরম নিদর্শন রেখে গেছেন। কেন, জানলে অবাক হবেন। ইহুদি সেই মেয়েটির নাম ছিল স্টিফেনিয়া ইসাক। যাঁর একটা “না” উত্তর পরবর্তী কালে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গেছিল পৃথিবীকে। সময়টা ১৯০৬ সাল, ভিয়েনা শহরে বসবাস করতেন ইহুদি পরিবারের মেয়ে স্টিফেনিয়া। তাঁর পরিবার ছিল ধনী ব্যবসায়ী। একদিন রাস্তার ধারে বসে থাকা একজন আর্টিস্টকে দেখে মেয়েটির নিজের পোট্রেট আঁকানোর ইচ্ছে হয়। ১৬ বছরের অপূর্ব সুন্দরী মেয়েটির পোট্রেট আঁকতে বসেন ১৮ বছরের শিল্পী।

হ্যাঁ, এই শিল্পীর নাম হিটলার। পোট্রেট আঁকতে আঁকতে ১৬ বছরের ইহুদি মেয়েটির প্রেমে পড়ে যায় কিশোর এর্ডলাফ হিটলার। একদিকে তাঁর দু চোখে তখন ভিয়েনা কলেজ অফ ফাইন আর্টস-এ ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে, বড় শিল্পী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছে তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে, অন্যদিকে দারিদ্রতার জ্বালায় পথে ঘাটে পোট্রেট এঁকে দু-পয়সা রোজগারের ব্যবস্থা করার প্রবল সংগ্রাম চলছে। এরই মধ্যে প্রেমের পরশ ছুঁয়ে গিয়েছিল হিটলারের নরম মনকে। শিল্পী মনের রোমান্স অনেক বেশি। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে প্রেমিকাকে প্রোপজ করেন হিটলার। স্টিফেনিয়া অবশ্য কেন উত্তর দেননি। প্রেম, সে তো কোন উত্তরের আশা না করেই এগিয়ে চলে আপন মনে।

হিটলার তার পোষা কুকুরটির মাধ্যমে প্রেমপত্র পাঠাতেন স্টিফেনিয়ার কাছে। তাঁকে একবার দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতেন বাড়ির সামনে। মেয়েটির বাড়ির লোক অবশ্য বিষয়টিকে নিয়ে গম্ভীর হয়। তাঁরা হিটলারকে নিষেধ করেন অনেকবার। ভবঘুরে আর্টিস্ট, তার উপর চালচুলোহীন ছেলেটির সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে হিটলারের একমাত্র পোষ্যটিকে হত্যা করলেন মেয়েটির বাড়ির লোক। একদিন চিঠি দিতে গিয়ে পোষ্য কুকুরটি আর ফিরে এলো না হিটলারের কাছে।

ওই পোষ্যটি ছিল তাঁর মা ক্লারার দেওয়া শেষ উপহার। রাস্তার উপর মায়ের দেওয়া উপহারকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে অস্বাভাবিক মানসিক কষ্ঠ পেয়েছিলেন হিটলার। সেই দিন থেকে বিন্দু বিন্দু বিদ্বেষ জমা হয়েছিল হিটলারের মনে। পরবর্তীকালে ন্যাৎসি দলের প্রতিষ্ঠাতার সেই চরম হিংসাত্মক ক্ষোভ দেখেছিল সারা বিশ্ব তথা সমগ্র ইহুদি জাতি। একজন শিল্পীর মন হয়ে উঠেছিল রক্ত পিপাসু রাষ্ট্রনায়কের হিংসাত্মক আগ্রসনের প্রতীক। তুলি হয়েছিল বন্দুকের নল আর রক্ত, যার একটাই রঙ।